নির্যাতিত কিশোরের পাশে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ইউএনও

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০১৭, ২১:৫৩

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে কথা বলার অপরাধে কিশোর পারভেজকে (১৪) মাথায় ও পুরুষাঙ্গে পেরেক ঢুকিয়ে বর্বরভাবে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে সোমবার তাকে বাড়ি নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা।

গত ২২ জুন এ পাশবিক নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে কালীগঞ্জ উপজেলার দাসবায়সা গ্রামে। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শিশুটির পাশে দাঁড়ান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছাদেকুর রহমান।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দামোদারপুর গ্রামে পারভেজের নানা বাড়িতে তাকে দেখতে যান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছাদেকুর রহমান। এ সময় তিনি তাকে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগতভাবে পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেন। উদ্যোগ নেন কালীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর।

এ ঘটনার ১১ দিন পর সোমবার বিকালে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। পারভেজের মা পারভীনা বেগম বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলার একজন আসামিকে পুলিশ আটক করে রাতেই।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছাদেকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পারভেজকে দেখতে তিনি উপজেলার দামোদারপুর গ্রামে যান। সে সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেন। এছাড়া, নিবিড় তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ইউএনও আরও জানান, এমন নির্যাতন আসলেই অমানবিক। পারভেজের পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় চালানো সম্ভব নয়। এলাকার জনগণও তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে। এলাকার বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, পারভেজ ও তার চাচাতো ভাই গত ২২ জুন বিকাল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী দাসবায়সা গ্রামের আজিজুলের মেয়ের সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। এসময় মেয়ের বাবা আজিজুল ও তার লোকজন এসে পারভেজকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়। এসময় পারভেজের সাথে থাকা তার চাচাতো ভাই নাজমুল পালিয়ে এসে বাড়িতে খবর দেয়। এরপর পরিবারের লোকজন দাসবায়সা গ্রামে যেয়ে পারভেজকে খুঁজে না পেয়ে তারা ফিরে আসে। ওইদিন সারারাত আজিজুল ও তার লোকজন পারভেজের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে। পরদিন ২৩ জুন দুপুর ১২টার সময় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা সাগর বিশ্বাস ফোনে পারভেজের মা পারভিনা বেগমকে জানায় তোমাদের ছেলেকে পাওয়া গেছে এসে নিয়ে যাও। এরপর পরিবারের লোকজন গিয়ে দেখে আমার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন, পুরুষাঙ্গে পেরেক ঢুকিয়ে ও মাথা পিটিয়ে থেতলে দেয় আজিজুলের লোকজন। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন কোলাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিজানুর রহমান।

পারভেজের মা পারভীনা বেগম জানান, ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে ওইদিন দুপুর ২টার দিকে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সেদিন রাতেই ডাক্তাররা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

সেখানে তার মাথায় অপারেশন করা হয়েছে। পারভেজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০০নং ওয়াডের ইউনিট-২ এর বি-৪০ নং বেডে চিকিৎসাধীন ছিল। সোমবার চিকিৎসকের পরামর্শে পারভেজকে অসুস্থ অবস্থায়ই বাড়ি নিয়ে আসেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ভাঙ্গা-রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে আসছে নতুন ২ জোড়া ট্রেন

‘৭ জানুয়ারি আ.লীগ প্রার্থীকে জেতাতে অপকর্ম করেছি’, আ.লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল

পিরোজপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ

গজারিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

প্রশ্নফাঁসে জড়িত ডা. তারিমের ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে লাখ টাকা জরিমানা

পূবাইলে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

চাঁদপুরে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি জেলেদের

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা যশোরে

সিলেটের ৪ উপজেলায় ২৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৯ জন স্বশিক্ষিত

পাইনাপেল সিল্ক উৎপাদনে আমাদের সহযোগিতা থাকবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :