বঙ্গবন্ধু ও আমার ভাবনা

জাফর ওয়াজেদ
| আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:২৫ | প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৫১
জাফর ওয়াজেদ

ডাক তিনি দিয়েছিলেন একই সঙ্গে স্বাধীনতা ও মুক্তির। সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিল জাতি হিসেব বাঙালি। বীরের মতো লড়াই করে স্বাধীন ভূখ- অর্জন করেছে। বিশ^ মানচিত্রে সার্বভৌম দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু মুক্তির সংগ্রাম আজও শেষ হয়নি। মুক্তির পথ তিনি দেখিয়েছেন, কিন্তু সেই পথ পরিক্রমাকালে ঘাতকের কালো হাত কেড়ে নেয় জীবন। স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হতে থাকে। যে বজ্রকণ্ঠ কোটি কোটি বাঙালিকে উদ্দীপ্ত করেছিল, আন্দোলিত করেছিল, সেই মহামানবকে রাতের আন্ধকারে আঁততায়ীরা হত্যা করল নৃশংসভাবে সপরিবারে।

স্বাধীনতা পরবর্তী মুক্তির সংগ্রামের চাকাকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ঘাতকরা সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমাজে বাঙালির মনে এবং ইতিহাসে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির দাপট পরিলক্ষিত হয় তার হত্যাযজ্ঞের পর। কিন্তু অজস্র দুর্গতিতেও বাঙালি স্বাধীনতাকে আঁকড়ে থাকে। এটা বাস্তবিক যে স্বাধীনতার অভিশাপ কিন্তু স্বীকার্য। অধীনতার আতঙ্কও অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের সমাজের গঠনে, বাংলাদেশের ইতিহাসে, বাংলাদেশের মনে এমন বিশেষ দুর্লঙ্ঘ বাধা রয়েছে, যার ফলে যে স্বাধীনতা জেগেছিল, সেই স্বাধীনতা মরীচিকায় পরিণত হলো পঁচাত্তর পাবর্তীকালে। সেই মরীচিকা যখন সরানোর কাজ চলে, তখন প্রতিবন্ধকতার বাহুগুলো আঁকড়ে ধরতে চায় কণ্ঠ। স্তব্ধ করে দিতে চায় স্বাধীনতা শব্দটিকে- এরকম অবস্থা পারি দিতে হয় আজও বাংলাদেশকে।

ইতিহাস বলে, রায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙালি জীবনের মাত্র নয়, সমগ্র মানবসমাজের ইতিহাসেই এক অবিনাশী গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। আর এ যুগের এক মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটা তো সঠিক এবং সত্য যে সমকাল যে মূল্যই দিয়ে যাক না কেন, ক্ষণকাল ভুলিয়ে দেয়ার যত চেষ্টাই করুক না কেন, আজকের বাঙালি সত্তার এই সারসত্যকে চেপে রাখা যায়নি, যাবেও না ভাবীকালে। যতদিন যায়, ততই বঙ্গবন্ধু প্রজ¦লিত হয়ে ওঠেন ইতিহাসের প্রতিটি পাতায়, বাঙালি জাতির আত্মমার্যাদাপূর্ণ হওয়ার প্রতিটি মুহূর্তে। এখনো যেমন, ভাবীকাল থেকে কালান্তরে প্রেরণা জোগাতে থাকবেন তিনি, শোষণহীন কল্যাণময় সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ গড়ার প্রত্যায় ও অঙ্গীকারকে।

সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন তার শুধু স্বপ্নই ছিল না। নিজেকেও তৈরি করেছিলেন সেই স্বপ্ন পূরণের হাল ধরার জন্য। নিজের জীবনকে ‘জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্য’ বানিয়ে সাহসের বরাভয় কাঁধে এগিয়েছেন তিনি। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির ‘ভাগ্যবিধাতা’ হিসেবে তিনি মূল্যায়িত হয়েছেন একাত্তর সালে। তাই স্বাধীনতার পুণ্যলগ্নে একাত্তরে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক প্রফেসর মাহমুদ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘উপমহাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসেও এমনটি আর আসেনি। যেন এ অলৌকিক ঘটনা। তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শেখ মুজিব।’

সত্যিই অসাধ্য সাধন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। অসাধারণ মহিমায় জেগে উঠেছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙালি। কিন্তু এই জেগে ওঠা ছিল না ফানুসের মতো। কিন্তু ফানুসেই যেন পরিণত হয়েছিল স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায়। পারাজিত শত্রুরা থেমে ছিল না। তার সঙ্গে যোগ দেয় এ দেশের নরাধমরা। যারা সদ্য জেগে ওঠা, স্বাধীন ভূখ- পাওয়া বাঙালি জাতির মুক্তির পথ স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। তারা বঙ্গবন্ধুর নামোচ্চারণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছিল। তাই দেখা যায়, সামরিক জান্তাশাসক ১৯৭৭ সালে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনকালে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে উল্লিখিত ‘জাতির পিতা’ ও ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দদ্বয় ব্যবহার করতে দেয়নি। ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি মেনে না নেয়ার মতো আস্পর্ধা দেখিয়েছে জান্তাশাসক, যিনি আবার বঙ্গবন্ধুর ডাকে ও পরিস্থিতির চাপে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি ঘাতক ও পরাজিত শক্তির কাছে সম্ভবত ভূমিকম্পসম ছিল বলেই তারা ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছিল। ‘শেখ মুজিব’ নামটি উচ্চারণ করতে সাহস পায়নি ক্ষমতা দখলকারী জান্তারা। তারা বুঝত যে, বঙ্গবন্ধুর আবদান এ দেশে ভাবীকালের মানুষের জন্য বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ অবদান। কিন্তু তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তাই বঙ্গবন্ধুর নাম ভুলিয়ে দেওয়ার নাগ ষড়যন্ত্র, গুটি চালা, ইতিহাস বিকৃত করার কাজটিতে প-শ্রম করেছে।

এ দেশের মানুষ তো জানেই বঙ্গবন্ধুর সময়কাল থেকে যে, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্থির লক্ষ্য সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়েছেন। নিজ জনগণকে সংগঠিত করেছেন। কোথাও মাথা নত করেননি। আপস দূরে থাক, জেল-জুলুম, হুলিয়া, অত্যাচর ইত্যাদি কোনো কিছুতেই ভীত হননি। অথচ তাকে অস্বীকার করার প্রাণপণ চেষ্টা আজও অব্যাহত। তার স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা থেমে নেই। মৃত বঙ্গবন্ধু জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে কম শক্তিশালী নন, এ কথাটা সামরিক জান্তাশাসকরা বুঝতে পেরেছিল। তাই তাকে অস্বীকার করা, সত্য ঘটনাকে চাপা দেয়ার মধ্য দিয়ে ভুলিয়ে দেয়ার কোনো প্রচেষ্টাই শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি।

আবার স্বাধীনতার পরপর যারা শেখ মুজিবের সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য নাশকতায় লিপ্ত হয়েছিল, মানুষ হত্যা, গুদাম-ফাঁড়ি লুট, সেতু-কালভার্ট ধ্বংস করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে আরও বিধ্বস্ত করে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য যত আয়োজন করেছে, তাতে বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ প্রশস্ত করতে পেরেছে, কিন্তু তার নাম ও অবদান কিছুই মুছে ফেলতে পারেনি।

শেখ মুজিবের সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছিল যারা, তারা স্বাধীনতার চার দশক পর উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, মুজিবকে অস্বীকার করার অর্থ কার্যত তাদের নিজেদেরই অস্বীকার করা। নিজেদের অস্তিত্ব যখন তারা হারাতে বসেছে, মুজিববিরোধিতার চৌহদ্দীতে, তখনই উপলব্ধি করেছে মুজিব ছাড়া তাদের কোনো ইহিতাস নেই। তাই আজ তারা মুজিব-বন্দনা শুধু নয়, সঠিক ইতিহাসেরও সন্ধান করছেন। এতকাল পরে এসে তারা এমনটাও উপলব্ধি করছেন যে, বঙ্গবন্ধু তো শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি নন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে ধারার উন্মেষ ঘটিয়েছেন, সে ধারাকে অস্বীকার করে তারা নিজেরা যেমন তেমনি বাঙালির অগ্রযাত্রার ধারা সূচনা সম্ভব নয়। বস্তুত বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করার অর্থ কার্যত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধারাকে অস্বীকার করার নামান্তর। ‘বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার বিকল্পে অন্য কারও ভূমিকা প্রতিস্থাপন করা অত্যন্ত হাস্যকর’।

জাতি হিসেবে বাঙালির জানা যে, এ দেশের কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-যুবা শেখ মুজিরের পেছনে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন সংগ্রামে এগিয়ে গিয়েছিল। শিক্ষিত সমাজের একটা অংশ, যাদের ‘নাক উঁচু’ ভাব, তারা শেখ মুজিবের নেতৃত্বের বিরোধিতায় সক্রিয় ছিল। এদের অনেকে স্বাধীনতা চেয়েছে, কিন্তু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে স্বাধীনতা চায়নি। যুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে তাদের মুজিববিরোধিতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একাত্তরের পরাজিতদের সাহস ও শক্তি সঞ্চয়ে সহায়তা করেছে। মুজিববিরোধিতার নামে তারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকারই করে এসেছে।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি কুধু একটি স্বাধীন দেশ ও একটি পতাকা লাভ করেনি; লাভ করেছিল একটি মূল্যবোধ, যা সন্নিবেশিত হয়েছিল সংবিধানের চার মূলনীতি হিসেবে। সেই মূলনীতিগুলো জান্তাশাসকরা পদদলিত করেছে। আর তা করা হয়েছিল পরাজিত শক্তির স্বার্থরক্ষায়। এদের কারণেই মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে সব শ্রেণীর দেশবাসীর স্বার্থে জাতীয় বিকাশের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, নানা কারণে তা এগুতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যা সে প্রক্রিয়াকে মারাতœক বিঘিœত করেছে। এমনকি নানা ধরনের বিকৃতি দেখা দেয় সমগ্র প্রক্রিয়ায়। অবশ্য এই ঘুণে ধরার প্রক্রিয়াটি কুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ব থেকেই। আসলে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তখন থেকেই এবং আজও তা থেমে নেই।

যে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সূতিকাগার ছিল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, সেই প্রতিষ্ঠানটি থেকে বঙ্গবন্ধুকে ছাত্রাবস্থায় বহিষ্কার করা হয়েছিল চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলন সমর্থন করায়। সেই বিশ^বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু আচার্য বা চ্যান্সেলর হিসেবে সমাবর্তনে যোগ দিতে চেয়েছিলেন পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট। কিন্তু ঘাতকরা তার আগেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। বঙ্গবন্ধুর আর ক্যাম্পাসে যাওয়া হলো না। দিন কয়েক আগে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেখ মুজিবকে অপদস্থ করতে ছাড়েনি। জাতির পিতার অবস্থান ও সম্মান দিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কার্পণ্য থাকার কথা নয় যেখানে, সেখানে ‘মুড়ি-মুড়কি একদর’ করার প্রবণতা অত্যন্ত গর্হিত। এর আগেও বিশ^বিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনিরে শেখ মুজিবকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেখ মুজিবের ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারবে না, তা জানি। কিন্তু তারা যেন ঋণটুকু স্বীকার করে। ঢাবি কর্তৃপক্ষ শেখ মুজিবকে অপছন্দ করতেই পারেন। কিন্তু ইতিহাসকে তারা কীভাবে বদলে ফেলবেন? ইতিহাস তো তাদের বশ হতে পারে না। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেটে বঙ্গবন্ধু হত্যা তথা বিশ^বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হত্যার বিচার চেয়েছিল ছাত্র প্রতিনিধিরা। কর্তৃপক্ষ সে সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে পারেননি সামরিক জান্তার ভয়ে ভীত হয়ে। শেখ মুজিবকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে হয়তো এক ধরনের, ‘বীরত্ব প্রকাশ পায়’, কিন্তু সেই বীরত্ব ধরে রাখা যায় না। কারণ, শেখ মুজিব তার সমকালীন সব নেতাকে ডিঙিয়ে বঙ্গবন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন। জাতির পিতা হলেন চরিত্রের অদম্য সাহস ও সততায়।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় পুঁজি এই সততা ও সাহসই তাকে বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ বাঙালিতে পরিণত করেছিল। শেখ মুজিবের কট্টর সমালোচকরাও তার হত্যাযজ্ঞের দুই দশক পরেও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। শেখ মুজিব সারা জীবন যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে করেছেন, পরেও করেছেন। তার জীবন নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের ইতিহাস। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে তার আপসকামিতা দেখিনি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরও দেখেছি সমানে তিনি লড়েছেন। সমান তেজক্রিয়ায়। আগের মতোই বলিষ্ঠ তিনি। আগের মতোই তেজস্বী।

স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিবের সংগ্রাম ছিল মুক্তির জন্য। উপনিবেশ ও পাকিস্তানি দাসত্ববৃত্তির মনোভাব থেকে মুক্তি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা থেকে মুক্তি; দুর্নীতি-কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা-সাম্প্রদায়িকতা, অশিক্ষা-কুশিক্ষা, নাশকতা-নৃশংসতা, পরশ্রীকাতরতা থেকে মুক্তির লড়াই তিনি শুরু করেছিলেন। দুর্নীতির বিষবাষ্প থেকে জাতিকে রক্ষার জন্য নানা পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। এমনকি নিজ দলের সংসদ সদস্যসহ দলীয় লোকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে বলিষ্ঠ অবস্থান ছিল বলেই তিনি ইতিহাসে অনন্য স্থানে আসীন।

একাত্তরের ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় জাতিকে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য ডাক দিয়েছিলেন। সেই ডাকে পুরো জাতি সাড়া দিয়েছিল, কতিপয় কুলাঙ্গার ছাড়া। আজও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যতই মুছে দিতে সচেষ্ট হোক না কেন, কোনোভাবেই আর মুছে ফেলা যাবে না বঙ্গবন্ধুর নাম। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে কোনো গবেষাধর্মী কাজ হয় না। এমনকি তার সৃষ্ট দলটি তৃতীয় দফা ক্ষমতায় থাকালেও বঙ্গবন্ধুর মাহাতœ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কি যেন এক কার্পণ্যবোধ করে। সেতু, কালভার্ট, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শকে জনগণের সামনে তুলে ধরা। যারা এ দায়িত্ব পালনে অপারগ ও অনীহা প্রদর্শন করেন, ইতিহাস শুধু নয় জাতিও তাদের ক্ষমা করবে না।’

শেখ মুজিবকে চাপা দিয়ে রাখার সব আযোজন ব্যর্থ হোক। মুক্ত হোন তিনি জনগণের কাছে। ‘মিছিলে স্লোগানে স্বদেশের গান গেয়ে, আমাদের পথচলা আজও মুজিবের পথ বেয়ে।’

লেখক: মহাপরিচালক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :