আজও দ্যুতি ছড়াচ্ছে ভাষা সৈনিক মতিনের চোখ

ইমতিয়াজ উল ইসলাম, সাভার (ঢাকাটাইমস)
 | প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৩৬

কোটি বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলা। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে এই ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে বাঙালিদের। ১৯৫২ সালে প্রাণের ভাষা বাংলাকে আপন করে পেতে যারা রাজপথে নেমেছিলেন তাদের মধ্যে একজন আব্দুল মতিন। তবে ভাষার জন্য লড়াকু এই সৈনিক আর আমাদের মাঝে নেই। ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর গুণী এই মানুষটি সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন পরপারে।

মৃত্যুর পাঁচ বছর পর এই ভাষা সৈনিকের দান করা কর্ণিয়ায় আলো ফিরে পেয়েছেন রেশমা নাছরিন নামে এক স্বাস্থ্য কর্মী। ঢাকার ধামরাই উপজেলার প্রত্যন্ত সুয়াপুর গ্রামের রেশমা এখন সমাজের হতদরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। আর রেশমার চোখে ফিরে পাওয়া সেই আলোয় যেন দ্যুতি ছড়াচ্ছেন ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন। এছাড়াও এই ভাষা সৈনিকের আরেকটি কর্ণিয়া নিজের চোখে সংযোজনের মাধ্যমে সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাতক্ষীরা জেলার কলেজ শিক্ষক ইকবাল কবির।

সুয়াপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মী চৌত্রিশ বছর বয়সী রেশমা নাছরিন বলেন, আট বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় হঠাৎ একদিন তার বাম চোখ চুলকাতে থাকে। আস্তে আস্তে চুলকানি বেড়ে যায় ও চোখ থেকে পানি ঝরতে থাকে। অনেক চিকিৎসকের কাছে গিয়েও এই রোগ ভালো হচ্ছিল না। ধীরে ধীরে তার বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে আসে। এরই মধ্যে ২০১৩ সালে ধামরাই সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষে মাস্টার্সের জন্য ভর্তি হন মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজে। ওই বছরেই তার বাম চোখ পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়। পরে ঢাকার সেন্ট্রাল চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক তার চোখে ইনফেকশন হয়েছে বলে জানায় এবং যত দ্রুত সম্ভব কর্ণিয়া স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। ২০১৩ সালের শেষের দিকে সন্ধানীতে আবেদন করেন।

রেশমা আরো বলেন, এরপর ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর টেলিভিশনের মাধ্যমে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন মৃত্যুর পর তার দুটি কর্ণিয়া দান করে গেছেন বলে জানতে পারেন। পরে সন্ধানীতে যোগাযোগ করলে ৯ অক্টোবর অপারেশনের মাধ্যমে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিনের চোখের কর্ণিয়া তার চোখে স্থানান্তর করা হয়। এতে মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ হয় তার। যদিও ওই সময় কর্ণিয়া কিনতে দুই লাখ টাকা লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেকের কন্যা রেশমা বলেন, মহান ভাষা সৈনিকের দেয়া চোখে আজ পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়ে তিনি গর্বিত। এমন এক মহান ব্যক্তির স্মৃতি ধারণ করতে পেরে তার জীবন সার্থক। গত পাঁচ বছর ধরে গর্বিত এই ভাষা সৈনিকের চোখের আলো দিয়েই তিনি গ্রামের হতদরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :