হোমকোয়ারেন্টাইনে বন্দি খুদে শিক্ষার্থীরা

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ)
| আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ১৬:০০ | প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ১৪:২২

একটা নির্দিষ্ট সিলেবাসে রুটিনের মধ্যে আবদ্ধ থেকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে হয়। সকাল হতেই পড়াশোনা শেষে স্কুল যাবার প্রস্তুতি। অতঃপর পাঠদানের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। ক্লাসে শিক্ষকের কাছে পড়া মুখস্থ না দিতে পারলে স্যারের বকুনি খাওয়া। আবার কখনো কখনো পড়াশোনার ভয়ে স্কুল ফাঁকি দেয়ার রেওয়াজও রয়েছে। শৈশবের এই স্মৃতিগুলো মানুষ কাঁধে বহন করে ছুটে চলে চাকরি জীবন থেকে বৈবাহিক জীবনেও।

অনেক সময় প্রাইভেট, কোচিংয়ের চাপে খুদে শিক্ষার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয় বলে তারা খুব একটা ছুটি পায়না। তাই শিক্ষার্থীরা বছরের শেষে একটিমাত্র বিশেষ ছুটির অপেক্ষায় থাকে। ছুটি পেলেই ছুটে যায় মামার বাড়ি, নানার বাড়ি আবার কেউ কেউ দাদুর বাড়ি। ছুটি শেষে ঘরে বসে থাকা খুদে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় থাকে নতুন বছরের জন্য। এ সময় শিক্ষার্থীরা নতুন বই আর নতুন ক্লাসে ওঠার আনন্দে বিভোর থাকে।

সম্প্রতি মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসের করনে লকডাউনের মতো তাদের জীবন হোমকেয়ারেন্টাইনে থমকে যায়। নির্দিষ্ট রুটিনে বড় হওয়া ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জীবন অনেকটাই থমকে গেছে। দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকায় না পারছে খেলাধুলা করতে, না পারছে ঘরে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে। সেই কারণেই তারা বারবার মিনতি করছে বাবা, মা কবে আবার স্কুলে যাব? কতদিন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়নি।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় কেজি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস অনন্যা বলে, বাড়িতে বসে বসে আর ভালো লাগছে না। বাবা মা ঘর থেকে বের হতে দেয় না। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারছি না। স্কুলে গেলে অনেক মজা হয়। স্যার গল্প পড়ায় কবিতা শোনায় আর বন্ধুদের সঙ্গে কতইনা মজা করি আমরা। ইস্ কবে আবার স্কুলে যেতে পারবো। তাদের মাঝে একরকম হতাশা দেখা যায়।

চাকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী এলিজা এলাহী বলে, স্কুলে যাবার একটা মজাই আলাদা। প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জীবনে স্কুলজীবন কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে বসে থেকে তার গুরুত্ব অনুভব করতে পারছি।

অভিভাবক নাজমা ফারুকীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনের সঙ্গে শিশুদের জীবনও থমকে গেছে। ঘরে বন্দি থাকায় তারা যেমন স্কুলে যেতে পারছে না, তেমনি বন্ধুদের সঙ্গে ওরা খেলাধুলা করতে না পারায় বাসায় ঠিকমতো পড়াশোনায় মনোযোগীও হচ্ছে না। কিন্তু করার কিছুই নেই। জীবন রক্ষার্থে করোনার কারণে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

চকময়রাম মডেল উচ্চ বিদ্যালরের প্রধান শিক্ষক এস.এম খেলাল-ই-রব্বানী বলেন, বিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদানের মাধ্যমে একটা প্রাণচাঞ্চল্য পরিবেশ তৈরি হতো। দিনগুলো ভালো কাটতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ৫৫ বছর বয়সে এসে একরকম ঘরে বসে বন্দি জীবন কাটাচ্ছি।

(ঢাকাটাইমস/৮এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :