ব্রিটিশ স্মারক মুদ্রায় টিপু সুলতানের বংশধর নূর

ব্রিটিশদের জন্যে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন এমন কয়েকজন অ-ব্রিটিশের ছবি স্থান পাচ্ছে ব্রিটিশ স্মারক মুদ্রায়। প্রথমেই যে নামটি উঠে এসেছে তিনি হলেন টিপু সুলতানের বংশধর ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান নূর ইনায়েত খান।
ভারতীয় বংশদ্ভূত প্রথম ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক জানিয়েছেন, যারা বংশগতভাবে ব্রিটিশ নয়, মাইগ্রেন্ট বা তৎকালীন সময়ের ব্রিটিশ কলোনীর বাসিন্দা ছিলেন যাদের ব্রিটেনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রয়েছে এমন কয়েকজন অ-ব্রিটিশকে সম্মান জানাতে ব্রিটিশ সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক আরো জানান, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ভারতীয় বংশদ্ভোত জেহরা জেইদীর এই প্রস্থাবটি খতিয়ে দেখছে ব্রিটিশ সরকার। এখবরটি নিশ্চিত করেছে দ্য টেলিগ্রাফ।
অনেকেই মনে করছেন বিশ্বজুড়ে ‘ব্লাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উপনিবেশের অস্বস্থিকর ইতিহাস মুছে নতুন ভাবমূর্তি তৈরী করতে এ উদ্যোগ। ব্রিটিশদের জন্যে বিশেষ অবদান রয়েছে এমন বেশ কয়েকজন অ-ব্রিটিশের তালিকায় কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য জেহরা জেইদীর প্রস্থাব অনুযায়ী যে নামটি প্রথমে রয়েছে তিনি হলেন ভারতীয় বংশদ্ভোত টিপু সুলতানের বংশধর নূর ইনায়েত খান।
১৯৪৪ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর জার্মানির দাথাউ কনসেনটেশন ক্যাম্পে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় ভারতীয় বংশদ্ভোত টিপু সুলতানের বংশধর এই মুসলিম তরুনীকে। জার্মানীর নাৎসী ক্যাম্পে মৃত্যুর সময় তার মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল- লিবেৎ- ফরাসী ভাষায় এই শব্দের অর্থ স্বাধীনতা। হত্যার পূর্বে জার্মান নাৎসী বাহিনী তার উপর নিশংস অত্যাচার চালায় তিনি মুখ খুলেননি এমনকি বলেননি তার আসল নামটুকুও।
জার্মানরা তাকে নোরা বেকার হিসেবেই জানত। তাদের সন্দেহ ছিল তিনি একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর। তাদের সন্দেহ ঠিক ছিল, আসলেই তিনি ছিলেন ব্রিটিশ গুপ্তচর। ব্রিটিশ গুপ্তচর এই ভারতীয় তরুনীর আসল নাম ছিল নূর ইনায়েত খান। নাৎসীরা যেসময় তাকে হত্যা করে তখন তার বয়স ছিল ত্রিশ বছর। মৃত্যুর পাঁচ বছর পর তাকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান 'জর্জ ক্রস' দেয়া হয়। মরনোত্তর ‘ক্রোয়া দ্য গ্যের’ (ফ্রান্সের অন্যতম সামরিক সম্মাননা-যুদ্ধের ক্রস) দেয়া হয় তাকে।
লন্ডনের গর্ডন স্কয়ারে তার একটি মূর্তি রয়েছে। এছাড়া ব্রিটেনের ষ্টাম্পেও তার ছবি স্থান পেয়েছে। ইনায়েত নূরের সম্মানে তার লন্ডনের বাড়ির সামনে ‘ব্লু প্লাক’ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় কাউন্সিল। অনেকেই এই ভারতীয় নারী সম্পর্কে জানতেন না এতদিন।
নূর ছাড়াও স্মারক মুদ্রার তালিকায় রয়েছেন ক্রিমীয় যুদ্ধে নিহত আফ্রিকান বংশদ্ভোত কৃষ্ণাঙ্গ সেবিকা মেরি সিকোল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করে ব্রিটিশদের জন্যে প্রাণ দেয়া নেপালী বংশদ্ভূত গোর্খা রেজিমেন্টের সৈন্য কূলবীর থাপা।
ঢাকা টাইমস/২৯জুলাই/একে

মন্তব্য করুন