বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে নানামুখী উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৯ | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৪

গরমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত এলএনজি এবং কয়লা আমদানির জন্য ডলার সরবরাহ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন যাতে ব্যহত না হয়, সেজন্য জ¦ালানি আমদানি নিশ্চিত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জ¦ালানি বিভাগ। এ লক্ষ্যে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)আমদানি করতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি আরপিজিসিএল। ঠিকাদারকে আগামী ১১ ও ১২ মার্চের মধ্যে এই এলএনজি সরবরাহ করতে হবে। স্পট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। যা দিয়ে গ্রীষ্মের চাহিদা মেটানো হবে। সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি এলএনজি আমদানির ক্রয় প্রস্তাব ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে।

গত জানুয়ারির শেষদিকে স্পট মার্কেটে এক কার্গো এলএনজির ক্রয়াদেশ দেয় আরপিজিসিএল। ফেব্রুয়ারির শেষদিকে তা দেশে এসে পৌঁছাবে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ বা আগামী মাসের শুরু থেকে স্পট মার্কেটের এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। এর বাইরে রামপাল এবং পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রর কয়লা সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সরবরাহ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকার একই সঙ্গে দুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। একটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি, অন্যটি ডলার সংকট। সম্প্রতি কয়লার অভাবে রাপমাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক দেন-দরবারের পর রাপমালের জন্য ডলার সংস্থান করা সম্ভব হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে যাওয়াতে গত বছরের শেষ দিকে সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে দিলে দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এতে বিদ্যুতে শিডিউল লোডশেডিং করা হয়। সরকারের তরফ থেকে এক ঘণ্টা লোডশেডিং এর কথা বলা হলেও প্রকৃত লোডশেডিং তার চাইতে বেশি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রীষ্মে জ্বালানি সংকট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর জ্বালানি সরবরাহে দুই কেন্দ্রকেই ডলার দেওয়া হয়।

রামপাল এবং পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র বলছে, রামপালে বকেয়া ১৪ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে সাড়ে ১২ মিলিয়ন ডলার এবং পায়রাতে ১৫১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১২০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়। একইসঙ্গে গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কেন্দ্র দুটির যে জ্বালানি প্রয়োজন হবে তাও দিতে সম্মতি জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানিও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘গ্রীষ্মে এবার সংকট হবে না। এভাবেই জ্বালানি আমদানি করা হচ্ছে।’ তিনি সেচ এবং গ্রীষ্মের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

জানা গেছে, প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৪৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সরবরাহ যদি প্রতিদিন আরও ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা যায় সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ অন্তত ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা সম্ভব। প্রতি ১০০ মেগাওয়াট কমবাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ২৪ ঘণ্টার জন্য ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। সেই হিসিবে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করলে প্রতিদিন আরও ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

এর বাইরে কয়লা চালিত দুটি কেন্দ্র থেকে (পায়রা এবং রামপাল) ১৭৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এরমধ্যে পায়রা থেকে ১২৪৪ মেগাওয়াট আর রামপাল থেকে কমপক্ষে ৫০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও মার্চ থেকে আদানির বিদ্যুৎ আসার কথা। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘মার্চের প্রথম সপ্তাহে আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। যদিও কয়লার ইস্যুতে আদানির সঙ্গে সরকারের সমঝোতা বাকি রয়েছে। সরকার এ বিষয়ে আদানিকে চিঠি দিলেও এখনও বৈঠক হয়নি।’

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, গরমে বিদ্যুতের চাহিদাকে মাথায় রেখে আমরা পরিকল্পনা করেছি। আগামী মার্চ মাস থেকে সেচ, গরম ও রমজানের জন্য চাহিদা শীতের তুলনায় ৫ হাজার মেগাওয়াট বাড়বে। সেই অতিরিক্ত ৫ হাজার মেগাওয়াট জোগান দেওয়ার জন্য কয়লা, তরল জ্বালানি থেকে এবং গ্যাস থেকে কতটুকু উৎপাদন করতে হবে, তার জন্য কতটুকু জ্বালানি লাগবে, জ্বালানির জন্য কত টাকা লাগবে, সেগুলো ইতিমধ্যে নির্ধারণ করে নীতিনির্ধারকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন, চাহিদা মোতাবেক অর্থ জোগান দেওয়া হবে এবং জ্বালানির প্রাপ্ততাও নিশ্চিত হবে।

(ঢাকাটাইমস/১০ ফেব্রুয়ারি/আরকেএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ে গ্রেপ্তার হন সাবেক রেলমন্ত্রীর এপিএস, যেভাবে উত্থান তার

‘মেড ইন জিনজিরা’: অবহেলিত সম্ভাবনার স্বপ্ন দুয়ার 

ইবনে সিনা হাসপাতালে রুশ কিশোরীকে যৌন হয়রানি: অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ

ভারতের রপ্তানির খবরে ১০ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম

অবন্তিকার আত্মহত্যা: এখনো মেলেনি তদন্ত প্রতিবেদন, থমকে গেছে আন্দোলন 

সড়কে এআইয়ের ছোঁয়া, বদলে যাচ্ছে ট্রাফিক ব্যবস্থা 

এখন তিন হাসপাতালে রোগী দেখছেন সেই ডা. সংযুক্তা সাহা

কোরবানির ঈদ সামনে, মশলার বাজারে উত্তাপ

প্রতিমন্ত্রীর শ্যালকের অপহরণকাণ্ড: ১৬ দিনেও গ্রেপ্তার হননি আলোচিত লুৎফুল হাবীব

মে দিবস বোঝে না শ্রমিকরা, জানে ‘একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হবে’

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :