শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের কাছে লোহাগাড়ার ইউএনওর চিঠি

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ মে ২০২৩, ১৫:৩৫ | প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৩, ১৫:৩৩

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ উল্যাহ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের নিকট একটি চিঠি লিখে চমক সৃষ্টি করেছেন।

সোমবার সকালে উপজেলার দুটি স্কুলে উপস্থিত প্রায় এক হাজার ১০০ অভিভাবকের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এবং শিক্ষার্থী মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার কপি চিঠি বিতরণের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী এই কার্যক্রমের শুভ সূচনা করেন তিনি।

একই সময়ে প্রতিষ্ঠান দুটির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তার অভিভাবককে দেওয়ার জন্য একটি করে চিঠি বিতরণ করা হয়। পরে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের হাতে পত্রটি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।

ইউএনও এর লিখিত চিঠিতে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদির অপব্যবহার, মাদকাসক্তি, কিশোর গ্যাং সৃষ্টি, অসামাজিক কার্যকলাপসহ বর্তমান প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে অনেকের মধ্যে সততা, নৈতিকতা, মানবিক গুণাবলি, ধর্মীয়, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ইত্যাদির চর্চার অভাবের কথাও উল্লেখ রয়েছে।

২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত 'স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ' বিনির্মাণে সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একজন অভিভাবকের করণীয় বিষয়ে চিঠিতে তিনি বিশেষভাবে গুরত্বারোপ করেন। গত বছর শিক্ষার মানোন্নয়নে তার গৃহীত কার্যক্রমসমূহের ফলে শিক্ষার্থীরা কতটা লাভবান হয়েছে তার বিবরণ রয়েছে। গত বছর শিক্ষা কার্যক্রমসমূহ সফলভাবে বাস্তবায়নে অভিভাবকদের সহযোগিতার জন্য তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি আগামী দিনেও সকল কার্যক্রমে অভিভাবকদেরকে পাশে থাকার আহবান জানান।

ইউএনও কর্তৃক এমন অভিনব একটি চিঠি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের দৃষ্টিগোচর হলে বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়।

বড়হাতিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হাকিম জানান, এটি একদম অভিনব একটি বিষয়। চিঠির প্রতিটি লাইনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ রয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে ও বর্তমান প্রজন্মের সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

বিজি সেনেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দীন জানান, এক কথায় এটি অসাধারণ একটি পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীর সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। একইসঙ্গে সমগ্র উপজেলার ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পত্র দেওয়াও এক বিস্ময়কর ব্যাপার বলে তিনি মনে করেন।

উপস্থিত অভিভাবকরা জানান, চিঠিটি আমরা পেয়েছি। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো বিষয় এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা সচেতন হয়ে অভিভাবক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবো৷ এতে আমাদেরই লাভ হবে। তারা ইউএনওকে ধন্যবাদ জানান।

ইউএনও শরীফ উল্যাহ এ বিষয়ে জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। তাছাড়া তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে আমাদের তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ দিন দিন ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এবং সন্তানের উজ্জ্বল ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে অভিভাবকদেরকে অবশ্যই সচেতন হয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মূলত সেই চিন্তা থেকেই বাস্তবতার আলোকে কিছু মেসেজ দেওয়ার জন্যই অভিভাবকদের প্রতি আমার এই চিঠি। আশা করি, ভালো কিছু হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :