সরকারের ‘পেইড বাহিনী’ মাঠে নামানো হয়েছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৩ মে ২০২৩, ১৮:৪৩ | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০২৩, ১৬:৫৩

মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সরকারের ‘পেইড বাহিনী’ মাঠে নামানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে নরক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশে দুর্বার গণআন্দোলনে উত্তাল রাজপথ আর বিদেশে রেড সিগন্যালের এই পরিস্থিতিতে ভোট ডাকাত সরকার পুরোপুরি বেপরোয়া-উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। বন্দুকের নলের শাসন শুরু করেছে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুণ্ডবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে মরিয়া আক্রমণ চালাচ্ছে। কেবল গায়েবি মামলা, হয়রানি-হামলা-মারপিট-ভাঙচুর-লুটপাটই নয়, এমনকি কুপিয়ে ও গুলিবর্ষণ করেও হত্যা ও পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে দেশের মানুষকে। মিছিল দেখলেই আতংকে গুলি চালানো হচ্ছে নির্বিচারে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে থাকতে দেয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে নরক রাষ্ট্রে পরিণত করেছেG আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়াবহ আওয়ামী তাণ্ডব আর তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নাটক শুরু হয়েছে। পত্র-পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক ও সোস্যাল মিডিয়ায় নানা রকম গুজব ছড়িয়ে গণমানুষকে বিভ্রান্ত করতে মাঠে নামানো হয়েছে সরকারের ‘পেইড বাহিনী।

‘নিশ্চিত পতনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা নিশিরাতের সরকারের ভিত্তিমূল হচ্ছে এখন দলীয় গুন্ডাবাহিনী, দলানুগত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আর অপপ্রচার ও উদ্ভট চাপাবাজী। ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে ‘লালকার্ড’ পাওয়া শুরু হয়েছে’—যোগ করেন রিজভী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের এক আলোচিত নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গতকাল মানববন্ধন করে প্রস্তাব দিয়েছেন নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান সংসদ ও আওয়ামী সরকারের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে হবে। তার এই প্রস্তাবের পক্ষে সরকার দলের নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি শেখ হাসিনার চিরকালীন বিরক্তি ও বিতৃষ্ণা। এজন্য এখন ভোট পণ্ড করার নীলনকশা বাস্তবায়নের চক্রান্ত শুরু করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সফর করে সবকিছুর বিনিময়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য ধরনা দিয়ে কোথাও পাত্তা পাচ্ছেন না। গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বিনাভোটে সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে র‌্যাব-পুলিশকে দিয়ে বিরোধী দল ও মতের হাজার হাজার মানুষকে গুম খুন অপহরণ করেছে। আওয়ামী লীগের মুখের সন্ত্রাস থেকেও মানুষ রক্ষা পায়নি। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কখনো পরোক্ষভাবে, কখনো সরাসরি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। গত বছরের ১৮ মে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দিয়ে হত্যা করার হুমকি দেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে পদ্মা সেতু থেকে পানিতে ফেলে চুবিয়ে মারার হুমকি দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, দেশের জনগণ ভুলে যায়নি, ‘একটার বদলে দশটা লাশ’ ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সারাদেশের আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি বৈঠাসহ রাজধানীতে জড়ো করেছিলেন শেখ হাসিনা।

সাবেক ছাত্রদল নেতা বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সকল সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা, হুকুমদাতা। ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে হুমকি দিয়ে কী বলেছিলেন সেটি আমি বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চাই। তাহলে দেখা যাবে আওয়ামী নেতাদের সন্ত্রাসী চরিত্র পাল্টায়নি। উগ্রতা, নির্মমতা, অসূয়া ও হিংস্রতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভূষণ।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা, মহানগর, গাইবান্ধা, নওগা, কুষ্টিয়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার আহত হামলার শিকার দলীয় নেতাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।

(ঢাকা টাইমস/২৩মে/জেবি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :