গাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র-অ্যাম্বুলেন্সও রক্ষা পাচ্ছে না ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:৪১ | প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:১৭

কয়েক দশকের মধ্যে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এরপর থেকেই এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইন অমান্য করে নির্বিচারে গাজার আবাসিক এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা, স্কুলসহ সর্বত্র বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি ইসরায়েলি বিমান হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো।

চিকিৎসা সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা স্বাস্থ্যসেবাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

গাজা শহরের সবচেয়ে বড় আল-শিফা হাসপাতালে তালাল ত্বহা এবং তার দল শনিবার সন্ধ্যায় একটি জরুরি কল পেয়েছিলেন। তিনটি গাড়ি শহরের পূর্ব কবরস্থানের আশেপাশে একটি অবস্থানের দিকে রওনা দেন তারা। দলটি সাহায্য করতে মানুষের আত্মচিৎকার ভেসে আসার শব্দ অনুসরণ করেছিল। কারণ শহরটি সেসময় অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল।

গাজার স্বাস্থ্যকর্মী তাহা আল-জাজিরাকে বলছিলেন, ‘হঠাৎ আমরা একটি বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু হলাম। আমরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ালাম। জরুরি দলটি সালাহ আল-দিন রোডে তাদের গাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং আরেকটি বিমান হামলার আগে গাড়িগুলো কয়েক মিটার এগিয়ে যায়।

তাহা জানান, এতে তার তিন সহকর্মী নিহত হন এবং তিনি আহত হন। ‘আমাদের মিশন মানবিক, আমরা শুধুমাত্র মানবিক সেবা প্রদান করি, এবং আমাদের কোনো কারণ ছাড়াই, কোনো অজুহাত ছাড়াই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল’ বলেন তাহা।

এটা কোনো একক ঘটনা ছিল না। গাজা স্ট্রিপের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসা সংস্থাগুলি ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে যে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অবরুদ্ধ ছিটমহলে অ্যাম্বুলেন্স এবং স্বাস্থ্য সুবিধাগুলিতে বোমাবর্ষণ করেছে আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে। যা এই ধরনের আক্রমণকে যুদ্ধাপরাধ হিসাবে তালিকাভুক্ত করে। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) বুধবার "চিকিৎসা দলকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্যবস্তু করার" নিন্দা জানিয়েছে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় আধা ঘণ্টার কম সময়ে চার স্বাস্থ্যকর্মী প্রাণ হারান।

বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, চিকিৎসা কর্মীদের টার্গেট করা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং মানবতার জন্য একটি গুরুতর লঙ্ঘন।

পিআরসিএস এই যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতা দাবি করে, অবিলম্বে তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচারের আহ্বান জানায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটিকে "অ্যাম্বুলেন্সের ওপর সরাসরি এবং নিয়মতান্ত্রিক আক্রমণ" বলে নিন্দা করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গেল শনিবার হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে কয়েক শ শিশু ও নারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।

বৃহস্পতিবারও উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত আছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রাণ গেছে অন্তত এক হাজার ৩০০ জনের।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি জানান, চলমান যুদ্ধে ১৮৬ ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৬০ সৈন্যকে জিম্মি করেছেন।

হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা সীমান্তের কাছে তিন লাখ সেনা জড়ো করেছে ইসরায়েল। ধারণা করা হচ্ছে, তারা যেকোনও সময় গাজার ভেতর ঢুকে স্থল হামলা শুরু করতে পারে। তবে স্থল অভিযান চালালে ইসরায়েলি সেনারা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে বলে সতর্ক করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :