শামীম সাব কথা দিছিলো নতুন ঘর তুইল্লা দিবো, হে কতা রাখছে: হতদরিদ্র রানু

‘শামীম সাব কথা দিছিলো নতুন ঘর তুইল্লা দিবো, হে কতা রাখছে। এহন আর বৃষ্টি হইছে ছাপড়া থাকন লাগবো না। ঈদের আগেই আমাকে নতুন ঘর করে দিছে। ঈদের আগেই নতুন ঘরে উঠছি। এইবার নতুন ঘরে ঈদ করুম।’ কথা গুলো বলেছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলতা এলাকার ষাটোর্ধ্ব হত দরিদ্র রানু বেগম। যিনি এর আগে কলাগাছের ঝোপের আড়ালে পলিথিন মোড়ানো ছাপড়া ঘরে বসবাস করতেন।
তাকে নতুন ঘর করে দিয়েছেন শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। তিনি তার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত বেগম আশ্রাফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে রানু বেগমকে নতুন ঘরটি করে দিয়েছেন।
নতুন ঘর পেয়ে খুশিতে দুই হাত তুলে দোয়া করেছেন সংসদ সদস্য এনামুল হক শামীমের জন্য।
জানা যায়, ৫০ বছর আগে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলতা এলাকায় ষাটোর্ধ্ব রানু বেগমের বিয়ে হয় একই উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর এলাকায়। একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায়সম্বল সব হারিয়ে স্বামী সন্তানদের সঙ্গে চলে যান রাজধানী ঢাকায়। তবে অর্থ কষ্টের সংসারে সন্তানের কাছে বোঝা হয়ে চার বছর আগে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন রানু বেগম। ভাইদের অবস্থাও তেমন ভালো না হওয়ায় অন্যের বাড়িতে দুমুঠো খাবারের বিনিময়ে কাজ করার পাশাপাশি রাস্তার ধারে এক টুকরো জমিতে পলিথিন আর কাপড় দিয়ে মোড়ানো খুপরি ঘর বানিয়ে জীবনযাপন করতে থাকেন।
রানু বেগমকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। বিষয়টি সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমের নজরে আসলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেন। তার নির্দেশ পেয়ে নড়িয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে রানু বেগমের ঘর করার জন্য জায়গা নির্ধারণ করেন। পরে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়।
শনিবার (৬ এপ্রিল) নতুন ঘরে উঠেন রানু বেগম। একইদিন রানু বেগমের জন্য ঈদের সামগ্রীও উপহার হিসেবে পাঠান সংসদ সদস্য এনামুল হক শামীম। নতুন ঘরে উঠেই ভিডিওকলে সংসদ সদস্য এনামুল হক শামীমের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রানু বেগম।
এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে রানু বেগম বলেন, ‘এক সময় রাস্তার ধারে কলাগাছের মধ্যে খুপরি ঘরে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপা হয়ে গেছি, শীতে একটা কাঁথা গায় দিয়া রাইত পাড় করছি। সাংবাদিকরা নিউজ করার পরে এমপি ভাই নিজে আমাকে দেখতে আসছে। তিনি আমাকে নতুন ঘর করে দিয়েছে। আমি আজ ভীষণ খুশি। ’
রানু বেগমের ভাই নূর হক ছৈয়াল বলেন, ‘এমপি সাব নিজে আমার বইনের জন্য বড় একটা ঘর করে দিছে, ঈদের জন্য উপহার পাঠাইছে। আমরা সবাই এমপি সাবের জন্য দোয়া করি।’
ভুমখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমকে জানাই। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঈদের আগেই রানু বেগমের জন্য নতুন ঘর করে দেওয়া হবে। আজ রানু বেগম নিজ ঘরে উঠেছেন। এমপি সাহেব তার কথা রেখেছেন। নতুন ঘর পেয়ে রানু বেগমও খুব খুশি হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমি সংবাদটি দেখতে পেয়ে নিজে রানু বেগমকে দেখতে যাই। ঈদের আগে রানু বেগমের জন্য আমার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত 'বেগম আশ্রাফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের' পক্ষ থেকে নতুন ঘর করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। ঈদের আগেই আমরা রানু বেগমকে নতুন ঘরটি উপহার দিতে পেরেছি। আমি সব সময় তার পাশে রয়েছি।
(ঢাকাটাইমস/০৭এপ্রিল/এমএইচ/পিএস)

মন্তব্য করুন