বেশি লাভের আশায় দুধ কাঁচাই খাচ্ছেন? কী ভয়ানক ক্ষতি হয় জানুন
দুধ হলো মানুষের প্রধান খাদ্য। আমাদের হাতের কাছে থাকা অত্যন্ত উৎকৃষ্ট মানের একটি পানীয়। সে কারণে পুষ্টিবিদরা ৮ থেকে ৮০ সবাইকেই নিয়মিত গরুর দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই কাজটা নিয়ম মেনে করলেই দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
কিন্তু মুশকিল হলো, অনেকেই মনে করেন যে, দুধ ফুটিয়ে খেলে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই বেশি লাভের আশায় তারা কাঁচা দুধই গলায় ঢালেন। পাশাপাশি পরিচিতদেরও কাঁচা দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। এহেন স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের কথা শুনে অনেকেই কাঁচা দুধ খেয়ে থাকেন।
এখন প্রশ্ন হলো, আদৌ কি কাঁচা দুধ খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী? নাকি এই দুধ পান করলে শরীরের বারোটা বাজার আশঙ্কাই বাড়ে? চলুন জেনে আসি কী বলছেন পুষ্টিবিদরা।
গুণের রাজা দুধ
পুষ্টিবিদদের কথায়, এক কাপ দুধ থেকে ১৪৯ ক্যালোরি শক্তি, ৮ গ্রাম প্রোটিন এবং ৮ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে দুধ হলো ভিটামিন এ, ডি, ই, কে, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামসহ একাধিক ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার।
এমনকি দুধে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনও রয়েছে। তাই পেশি থেকে হাড়, দেহের একাধিক অঙ্গের হাল ফেরানোর কাজে দুধের জুড়ি মেলা ভার। সুতরাং নীরোগ জীবন কাটানোর ইচ্ছা থাকলে প্রতিদিন দুধ খেতে ভুলবেন না। এতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
কিন্তু কাঁচা দুধ খাওয়া কি আদৌ উপকারী?
এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদরা বলছেন, কাঁচা দুধকে অনেকে শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী মনে করেন। কিন্তু বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং কাঁচা দুধ খেলে শরীরের একাধিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কারণ গরু বা মহিষের দুধ কাঁচা অবস্থায় খেলে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া দেহে প্রবেশ করার সুযোগ পায়। যে কারণে বমি, ডায়ারিয়া থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে এখানেই শেষ নয়, বরং নিয়মিত কাঁচা দুধ খেলে দীর্ঘমেয়াদে আর্থ্রাইটিস, গ্যাসট্রাইটিসের মতো জটিল রোগের খপ্পরেও পড়তে পারেন। তাই সাবধান হন এখন থেকেই।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলেও চলবে না
কাঁচা দুধ খেলে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা কমে। তাই অনেক স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞ এই রোগে ভুক্তভোগীদের কাঁচা দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এখানে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থেকে বাঁচতে গিয়ে যদি কাঁচা দুধ খান, তাহলে একাধিক ব্যাকটেরিয়ার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে।
এমনকি দীর্ঘমেয়াদে আরও বিপদের মুখে পড়বেন। তাই কাঁচা দুধ না খেয়ে বরং সোয়া বা আমন্ড মিল্ক খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। এতেই কিন্তু বিপদ এড়িয়ে উপকার পাবেন হাতেনাতে।
দুধ ফুটিয়ে খেতে হবে
পুষ্টিবিদদের কথায়, সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে দুধ ফুটিয়ে খাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলেই দুধে থাকা একাধিক ব্যাকটেরিয়ার খেল খতম হবে। ফোটানো দুধ খাওয়ার পর বিপদের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। ফোটানোর ফলে দুধের পুষ্টিগুণও কমে না।
দই, ছানা চলতেই পারে
দুধের পাশাপাশি নিয়মিত দই, ছানা, পনির খাওয়ারও পরামর্শ পুষ্টিবিদদের। এসব খাবারও পুষ্টির খনি। কারণ এগুলোতেও রয়েছে প্রোটিন থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে এসবও ডায়েটে রাখুন।
(ঢাকা টাইমস/২৪অক্টোবর/এজে)
মন্তব্য করুন