শ্রীলঙ্কাকে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের লজ্জা দিলো অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫১
অ- অ+

ম্যাচের ফলাফল ঠিক কী হবে সেটা যেনো আগেই অনুমান করা যাচ্ছিল। কেননা অস্ট্রেলিয়ার রানপাহাড়ের জবাবে লঙ্কানা প্রথম ইনিংসে মহা ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ফলোঅনে পড়া শ্রীলঙ্কা পরাজয়ের ব্যবধান কতটা কমাতে পারে, সেটাই ছিল দেখার।

তবে ঘরের মাঠেও লজ্জা থেকে বাঁচতে পারলো না শ্রীলঙ্কা। তাদের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ই উপহার দিলো অস্ট্রেলিয়া। গল টেস্টে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে এক ইনিংস এবং ২৪২ রানে।

এটা নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ইনিংস পরাজয়। আগের ম্যাচটি ছিল ভারতের বিপক্ষে, ২০১৭ সালে নাগপুরে ইনিংস ও ২৩৯ রানে হেরেছিল তারা। আবার ইনিংস ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়ার এটা চতুর্থ সর্বোচ্চ বড় জয়। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইনিংস ও ৩৬০ রানের হারানোর ম্যাচটি শীর্ষস্থান দখল করে আছে। পরের দুটি ম্যাচই পঞ্চাশের দশকে, ১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৩৩২ রানে জেতার চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইনিংস ও ২৫৯ রানের ব্যবধানে হারায় তারা।

গলে এ ম্যাচেই এশিয়ার দেশগুলোয় টেস্টের এক ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ ৬৫৪ রান (৬ উইকেটে) করে অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে ১৬৫ রানে অলআউট করে ফলোঅনে ফেলায় তারা। চতুর্থ দিন ফের ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে তুলতে পারল ২৪৭ রান। মাঝে বৃষ্টি বাগড়া দেয় দুদিন।

৪৮৯ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনে পড়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ১১৪ রানে। এর ২টিই নেন নাথান লায়ন, উইকেটদুটি ৪১ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও ৩১ রান করা দিনেশ চান্দিমালের। এরপর ৬৫ রানের জুটি হয় কুশাল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার মধ্যে। সিলভাকে ম্যাথু কুনেম্যান ফিরিয়ে তাদের জুটি ভাঙেন, তখন শ্রীলঙ্কার রান ১৭৯। কুশাল মেন্ডিস ফিরে যান স্কোর বোর্ডে আর ৮ রান যোগ হওয়ার পর।

তখন শ্রীলঙ্কার ললাটে বড় হারই কড়া নাড়তে থাকে। এই অবস্থায় নায়কোচিত ফিফটি করেন জেফ্রে ভেন্ডারসে। তার ৪৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংসেও শ্রীলঙ্কা বড় হার এড়াতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া কুনেম্যান এ ইনিংসে নেন ৪টি। আর নাথান লায়নের শিকারও ৪, প্রথম ইনিংসে তিনি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ২৩২ রান করা উসমান খাজা হন ম্যাচসেরা, এটা তার ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। দীর্ঘদিন পর রানে ফিরতে পেরে খাজার নিদারুণ খুশিই হওয়ার কথা। স্মিথও কি কম খুশি? প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে টেস্টে প্রায় এক বছর পর নেতৃত্বভার কাঁধে নিয়ে নেমেছিলেন তিনি, গলের স্পিনবান্ধব উইকেটে জিতেছিলেন টসও। এই টেস্টে আবার তার সামনে ছিল ১০ হাজার রানের কিংবদন্তিদের তালিকায় ঢোকার মাইলফলক, অপেক্ষা ছিল মাত্র ১ রানের। বর্ডার গাভাস্কার সিরিজের শেষ ইনিংসে ৯৯৯৯ রানে আটকে যাওয়ার পর গলে প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়েই ১০ হাজারের কিংবদন্তিদের ক্লাবে ঢুকেন তিনি। এরপর উদ্‌যাপন করেন অনেকক্ষণ ধরে, সেঞ্চুরির পর যেমন করা হয়।

এই ম্যাচে আরও একবার এমন উদ্‌যাপন করতে হয়েছে স্মিথকে। কারণ মাইলফলকের ইনিংসটিকে তিন অঙ্কে রূপ দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত থামেন ২৫১ বলে ১৪১ রান করে। তিনি আউট হওয়ার পর অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে ৯০ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন জস ইংলিস, অভিষেক সেঞ্চুরি রেকর্ডবুকের পাশাপাশি ইংলিসের এই ইনিংস আরও একটা রেকর্ড-তালিকায় জায়গা পেয়েছে। অভিষেকে করা সেঞ্চুরির মধ্যে এটা দ্বিতীয় দ্রুততম। ৮৫ বলে দ্রুততম অভিষেক সেঞ্চুরিটি শিখর ধাওয়ানের।

ট্রাভিস হেডের কথা তো বলাই হয়নি। ওপেন করতে নামলে সবাই একটু রয়েসয়ে খেলে থাকেন। কিন্তু ৫৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো ওপেন করতে নামা এ ক্রিকেটার টেস্ট ম্যাচটাকে টি-২০ বানিয়ে ফেলেছিলেন। মাত্র ৩৫ বলেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন, থামেন ৪০ বলে ৫৭ রান করে। লঙ্কানদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট নেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া ও ভেন্ডারসে।

(ঢাকাটাইমস/০১ফেব্রুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঈদের দিন ভারতে পালানো কোরবানির মহিষ ফেরত আনলো বিজিবি
মেট্রোরেলে মাংস নিয়ে ওঠার চেষ্টা, অতঃপর বাধা
দেশে আরও ৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত
গুম এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদ পরিবারের পাশে রয়েছে বিএনপি: আমিনুল হক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা