বাসে বিস্ফোরণের পর পশ্চিম তীরে তীব্র অভিযানের প্রস্তুতি ইসরায়েলের

ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় পার্কিং ডিপোতে তিনটি খালি বাসে বোমা বিস্ফোরণের পর অধিকৃত পশ্চিম তীরে তীব্র অভিযানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের মতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যে ‘বোমা হামলা’ চালানো হয়েছিল, তাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তা সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাজ বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষেবা।
“একাধিক গণবাসে বোমা হামলার চেষ্টার পর প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সবেমাত্র একটি নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন করেছেন,” ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে।
“প্রধানমন্ত্রী জুডিয়া এবং সামেরিয়া [অধিকৃত পশ্চিম তীর]-এ কথিত ‘সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রগুলো’র বিরুদ্ধে তীব্র অভিযান চালানোর জন্য [সামরিক বাহিনীকে] নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলি পুলিশ এবং আইএসএ [ইসরায়েলি নিরাপত্তা সংস্থা]-কে ইসরায়েলি শহরগুলোতে আরও হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছেন,” নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
পশ্চিম তীরের কিছু অংশ তাৎক্ষণিকভাবে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের চলাচলের ওপর আরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে, দ্য জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, বিস্ফোরকগুলো পশ্চিম তীরের ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোর’ সঙ্গে যুক্ত ছিল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী পরে ঘোষণা করে যে তারা ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সপ্তাহব্যাপী আক্রমণাত্মক অভিযান সম্প্রসারণের প্রস্তুতি হিসেবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর দায়িত্বে থাকা সেন্ট্রাল কমান্ড-এ তিনটি অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করেছে।
“ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী চলমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে যাচ্ছে এবং আক্রমণাত্মক তৎপরতা সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে,” সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরের আশপাশে ডিপোতে পার্ক করা তিনটি খালি বাস বোমা হামলায় ধ্বংস হয়েছে এবং পুলিশ ওই এলাকায় আরও দুটি অবিস্ফোরিত বোমা উদ্ধার করেছে।
তদন্তের দায়িত্ব ইসরায়েলের শিন বেট অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশের মতে, শুক্রবার সকালে যখন লোকেরা কাজে যাচ্ছিল তখন বিস্ফোরকগুলো বিস্ফোরিত হওয়ার কথা ছিল, যা পশ্চিম তীরে ব্যবহৃত অন্যান্য ডিভাইসগুলোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, তবে আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
পুলিশের মুখপাত্র হাইম সারগ্রোফ ইসরায়েলি গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমাদের নির্ধারণ করতে হবে যে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি বেশ কয়েকটি বাসে বিস্ফোরক রেখেছিল কিনা, নাকি একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ছিল।”
আল জাজিরার সংবাদদাতা নুর ওদেহ বলেছেন, “বিস্ফোরণের পর ইসরায়েলি সামরিক পদক্ষেপ বৃদ্ধির ঘোষণার পর পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা আরও ভয়ের মধ্যে বাস করছে।
“অধিকৃত পশ্চিম তীর, বিশেষ করে উত্তরে তুলকারেম এবং জেনিন, এক অভূতপূর্ব সামরিক আক্রমণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে ৪০ হাজারেরও বেশি লোককে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে,” ওদেহ বলেছেন।
২১ জানুয়ারি তাদের আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী দখলকৃত পশ্চিম তীর জুড়ে শত শত চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে এবং সেই সময়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাদের দ্বারা স্থানীয় সম্প্রদায়ের বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞও ঘটেছে।
(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/এফএ)

মন্তব্য করুন