লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি: অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে উত্তপ্ত শহর

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অব্যাহত বিক্ষোভ ও সহিংসতার প্রেক্ষিতে শহরের ডাউনটাউন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র কারেন বাস। তিনি আরও জানান, এই কারফিউ কয়েক দিন পর্যন্ত চলতে পারে।
বিক্ষোভের পেছনে মূলত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানকে দায়ী করা হচ্ছে, যা দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় তুলেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে বোস্টন, হিউস্টন, ফিলাডেলফিয়াসহ নানা শহরে।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগের প্রধান জিম ম্যাকডোনেল জানান, গত চার দিনে শহরজুড়ে অন্তত ৩৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র আজই (মঙ্গলবার) গ্রেফতার হয়েছে প্রায় ২০০ জন। বিক্ষোভ চলাকালে শহরের অন্তত ২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাটের শিকার হয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানায়, কারফিউ মূলত শহরের ডাউনটাউনের ১ বর্গমাইল (২.৫৯ বর্গকিলোমিটার) এলাকাজুড়ে প্রযোজ্য হবে। তবে কারফিউ থেকে ছাড় পাবেন নির্ধারিত এলাকার বাসিন্দা, গৃহহীন ব্যক্তি, গণমাধ্যমের শংসাপত্রধারী প্রতিনিধি, জননিরাপত্তা ও জরুরি পরিষেবা সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস বলেন, “পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। জননিরাপত্তা ও সম্পত্তি রক্ষার্থে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।” পুলিশ প্রধান ম্যাকডোনেল জানান, “শনিবার থেকে বেআইনি এবং বিপজ্জনক আচরণ বেড়েছে, যা শহরের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করছে।”
এর আগে গত রোববার (৮ জুন) শহরে বিক্ষোভ ঠেকাতে মোতায়েন করা হয় ন্যাশনাল গার্ড। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে একে ‘অবৈধ’ আখ্যা দেন এবং সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিক্ষোভ চলাকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। কোথাও কোথাও পুলিশ বোতল ও কংক্রিট ছোড়ার অভিযোগে সমাবেশগুলোকে 'অবৈধ' ঘোষণা করেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, প্রযুক্তি কোম্পানি ওয়েমোর স্বচালিত গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কড়া নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ কেবল লস অ্যাঞ্জেলেস নয়, সারা দেশের এক গভীর অসন্তোষের প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
(ঢাকাটাইমস/১১ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন