কারফিউ অমান্য করায় লস অ্যাঞ্জেলেসে চলছে ‘গণগ্রেপ্তার’

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে কারফিউ জারির পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ অভিযান শুরু করেছে। শহরের মেয়র কারেন ব্যাস মঙ্গলবার রাতে কারফিউ জারি করেন, যা স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানায়, কারফিউ কার্যকর থাকায় যারা তা অমান্য করছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী এলাকা ছেড়ে গেলেও পুলিশ ধীরে ধীরে পুরো এলাকা খালি করে দেয়। এ সময় এক বিক্ষোভকারীকে মাটিতে ফেলে, প্লাস্টিকের জিপ-টাই দিয়ে হাত বেঁধে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুসারে, কারফিউ বাস্তবায়নে ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে পেট্রোলের একটি হেলিকপ্টার লিটল টোকিও এলাকার উপর দিয়ে প্রায় এক হাজার ফুট ওপরে চক্কর দিয়েছে। এই পুলিশি পদক্ষেপে নগরজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের মেয়র কারেন ব্যাস জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী কঠোর নীতির বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের কারণে শহরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, “গত রাতেই অন্তত ২৩টি দোকান লুটপাট ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। ডাউনটাউন এলএ-তে সর্বত্র গ্রাফিতি, যা ব্যবসা ও সম্পত্তির অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “যদি আপনি ডাউনটাউন এলএ-তে বসবাস বা কাজ না করেন, দয়া করে ওই এলাকা এড়িয়ে চলুন। কারফিউ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কেবল লস অ্যাঞ্জেলেস নয়, ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতেও তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে অন্তত ১৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, নিউইয়র্ক সিটি, আটলান্টা, লুইসভিল, ডালাস, বস্টন, পিটসবার্গ, শার্লট, সিয়াটল এবং ওয়াশিংটন ডিসিসহ বহু শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ।
ডালাস ও আটলান্টায় অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। আটলান্টায় আইচ (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) অফিসের সামনে আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন অনেকে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের বিক্ষোভ চলাকালে ডেভিড হুয়েরতা নামে এক প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা গ্রেফতার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বস্টন, শার্লট, ওয়াশিংটন ডিসিসহ বিভিন্ন শহরে আলাদা বিক্ষোভ হয়েছে।
বিক্ষোভ দমনে কারফিউ এবং পুলিশি অভিযানে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন কতদূর গড়ায় এবং কর্তৃপক্ষ কীভাবে তা মোকাবিলা করে, সেটি এখন সময়ের অপেক্ষা।
(ঢাকাটাইমস/১১ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন