রাজধানীতে আবাসিকে ১০০ ফুট রাস্তা হলেই মিলবে বাণিজ্যিক অনুমতি

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৩, ১১:৫৩ | প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২৩, ০৯:৩৫

রাজধানীতে চাইলেই আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা যায় না। রাজধানীতে আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক ভবনের অনুমতি দেবে রাজউক। নির্দিষ্ট ফি ও শর্তসাপেক্ষে আবাসিক প্লট বা ভবনগুলোকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ব্যবহারের অনুমতি দিতে যাচ্ছে রাজউক। প্রথমে রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে এ সুযোগ দেবে সংস্থাটি। সেক্ষেত্রে অভিজাত এলাকার ভবনমালিকদের গুনতে হবে কাঠাপ্রতি ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা। সঙ্গে মানতে হবে বেশ কয়েকটি শর্ত।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) মহাপরিকল্পনায় যেসব রাস্তা বাণিজ্যিক হিসেবে নির্দিষ্ট করা আছে, সেসব এলাকায়ই শুধু বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি মিলত এত দিন। তবে এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী শুধু ১০০ ফুট রাস্তা হলেই দুই পাশের প্লটে মিলবে বাণিজ্যিক স্থাপনা করার অনুমতি। তবে তার জন্য দিতে হবে নির্ধারিত ফি।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজউকের আওতাধীন গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা (প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব) এলাকার আবাসিক প্লটগুলো বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়, আবাসিক প্লটগুলো বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের জন্য প্লটসংলগ্ন রাস্তার প্রশস্ততা ন্যূনতম ১০০ ফুট হতে হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুলশান আবাসিক এলাকার গুলশান অ্যাভিনিউ, বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বারিধারা আবাসিক এলাকার প্রগতি সরণি এবং উত্তরা প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব আবাসিক এলাকার জসীম উদদীন অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি, সোনারগাঁ জনপথ, গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ, গরিবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউ, শাহ মখদুম অ্যাভিনিউ, শাহজালাল অ্যাভিনিউ, ঈসা খাঁ অ্যাভিনিউ ও আলাওল অ্যাভিনিউয়ে আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তন করা যাবে। এ ছাড়া রাজউকের আওতাধীন অন্যান্য এলাকার ১০০ ফুট প্রশস্ত সড়কের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের জন্য ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুসরণসহ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ভূমি ব্যবহার সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।

গুলশান, বনানী, বারিধারা (জে ব্লক বাদে) আবাসিক এলাকায় আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনে ফি দিতে হবে কাঠাপ্রতি ১ কোটি টাকা। বারিধারা জে ব্লক ও উত্তরা (প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব) আবাসিক এলাকায় কাঠাপ্রতি ফি ৫০ লাখ টাকা। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা এলাকায় অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লটগুলোর মালিকদের পরিপত্র জারির ছয় মাসের মধ্যে আবেদন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজউক থেকে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে নির্ধারিত জরিমানাসহ ফি দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে প্লটের ধরন পরিবর্তনের আবেদন না করলে রাজউক আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।

পরিত্যক্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত প্লটে বিদ্যমান অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে আবাসিক ভবন ও বহুতল ভবন এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সুবিধাদি যেমন স্কুল-কলেজ, পার্ক, গাড়ি পার্কিং, দুর্যোগকালীন সমাবেশ, সিনিয়র সিটিজেন কেয়ার, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বারিধারা কে ব্লক ও গুলশান প্রকল্প এলাকার (নর্থ গুলশান অ্যাভিনিউ) কয়েকটি ব্লকে ডিপ্লোম্যাটিক জোন থাকায় সেখানে নিরাপত্তা সংস্থার অনাপত্তি গ্রহণ করে বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের অনুমোদন নিতে হবে।

আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা এলাকায় স্থানভেদে মানতে হবে আলাদা আলাদা নিয়ম।

আবাসিক প্লটে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নিনির্বাপণ ইত্যাদি সব বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। ইমারত বা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রকাশিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নিনির্বাপণ সংক্রান্ত সর্বশেষ আইন ও বিধিমালা ইত্যাদি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক হবে।

আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা এলাকায় স্থানভেদে মানতে হবে আলাদা আলাদা নিয়ম। এর মধ্যে আবার উত্তরা (১ম ও ২য় পর্ব) আবাসিক এলাকার বেশকিছু এরিয়া বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য বিমান উড্ডয়ন সংক্রান্ত উচ্চতা নিয়ন্ত্রিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এসব এলাকায় উচ্চতার সীমা নির্ধারিত (হাইট রেসট্রেকশন) থাকার ফলে কিছু প্লটে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই প্লটগুলো চিহ্নিত করে সুপরিকল্পিতভাবে সেখানে পার্ক, খেলার মাঠ, কবরস্থান, জলাধার ও সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সোলার পার্ক ইত্যাদি স্থাপন করা যাবে।

পরিবর্তিত বাণিজ্যিক প্লটের ভেতরে বাধ্যতামূলকভাবে পণ্যসামগ্রী ওঠা-নামার জন্য সুনির্দিষ্ট ও পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনুমোদনের পর পরিবর্তিত বাণিজ্যিক প্লটগুলো আবশ্যিকভাবে অনাচ্ছাদিত (উন্মুক্ত) স্থানের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ শোষণযোগ্য ভূমি রাখতে হবে।

এছাড়া গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা (১ম পর্ব ও ২য় পর্ব) আবাসিক এলাকার ভেতরে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া পরিত্যক্ত সম্পত্তি উচ্ছেদ করা হবে। এরপর সেখানে আবাসিক ভবন, বহুতল ভবন, বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সুবিধাদি যেমন- স্কুল, কলেজ, পার্ক, গাড়ি পার্কিং, দুর্যোগকালীন সমাবেশ, সিনিয়র সিটিজেন কেয়ার, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ইত্যাদি স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অন্যদিকে বারিধারা কে ব্লক ও গুলশান প্রকল্প এলাকার (নর্থ গুলশান এভিনিউ) কয়েকটি ব্লকে ডিপ্লোম্যাটিক জোন রয়েছে। তাই এসব এলাকায় নিয়োজিত নিরাপত্তা সংস্থার নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনাপত্তি গ্রহণ করে নির্ধারিত রাস্তা সংলগ্ন প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়া যাবে।

তবে প্রতিটি পরিবর্তিত বাণিজ্যিক প্লটের ভেতরে বাধ্যতামূলকভাবে পণ্যসামগ্রী ওঠা-নামার জন্য সুনির্দিষ্ট ও পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনুমোদনের পর পরিবর্তিত বাণিজ্যিক প্লটগুলো আবশ্যিকভাবে অনাচ্ছাদিত (উন্মুক্ত) স্থানের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ শোষণযোগ্য ভূমি রাখতে হবে। পাশাপাশি আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তার ক্রমবিন্যাস সম্পূর্ণ আলাদা, তাই ট্র্যাফিক সার্কুলেশন ও রাস্তার ক্রমবিন্যাস পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

যারা ইতোমধ্যে আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করছেন বা করার ইচ্ছা রয়েছে তারা রাজউকের অনুমতি নিলে বৈধতা পাবে।

(ঢাকাটাইমস/০৯ জুলাই/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :