কোহলি-রাহুল জুটিতে দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু ভারতের

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইম
 | প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ২২:৩৯

অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২০০ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। মাত্র ২ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। দলটার নাম ভারত, যে কোনো চাপে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে জানে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দুই বারের বিশ্বকাপ জযী দলটি যখন তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে, তখন জোড়া হাফ সেঞ্চুরি তুলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেলেন বিরাট-রাহুল।

বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ১৬৫ রানের জুটিতে তিন উইকেট পড়ে যাওযার পড়েও বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত।

অস্টেলিয়ার বিপক্ষে আজ ভারতের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন রোহিত শর্মা ও ইশান কিষাণ। দলীয় মাত্র ১ রানে শুন্য রান করে মিচেল স্টার্কের বলে আউট হয়ে ফিরে যান ইশান কিষাণ। ১ রানেই ভাঙে ভারতের ওপেনিং জুটি।

ইশান কিষাণের পর এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন যান ভারত দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনিও ফিরে যান শূন্য করে। ছয় বল খেলে এক রানও করতে পারেননি তিনি।

রোহিতের পর শ্রেয়াস আইয়ারও থাকতে পারেননি ক্রিজে। জশ হ্যাজলউডের বলে শূন্য রান করে তিনিও পিরে যান ।

এর পরেই জুটি গড়েন বিরাট-রাহুল। তিন উইকেট পড়ে যাওযার পর এই দুই ব্যাটার দেখেশুনে খেলতে থাকেন। তাড়াহুড়ো না করে উইকেট ধরে রেখে ঠান্ডা মাথায় খেলতে থাকেন। যার ফলে আজ ওয়ানডেতে তৃতীয়বারের মতো ১০০ রানের জুটি গড়লেন তারা।

দলের বিপদের দিনে এই দুই ব্যাটারই তুলে নিয়েছেন নিজেদের ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি।

বিরাট কোহলি ৭৫ বলে তুলে নেন নিজের অর্ধ শতক। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি চারের মার। তবে বিরাট ১২ রানেই আউট হয়ে যেতে পারতেন। ক্যাচ ফেলে দিয়ে কোহলিকে জীবন দেন মার্শ। জীবন পেয়েই অর্ধশতক তুলে নেন তিনি।

কোহলির পর হাফ সেঞ্চুরি তলে নেন লোকেশ রাহুলও। ৭২ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি চারের মার।

কিন্তু এই দুই ব্যাটারের জুটি ভাঙে ১৬৫ রানে, ৮৫রান করা বিরাটের বিদায়ের পর। ২০২৩ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ব্যক্তিগত শতকের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন বিশ্বসেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। তার সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায় ছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দিয়ে ৮৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন তিনি।রয়ে গেল ১৫ রানের আক্ষেপ।

বিরাট ফিরে গেলেও রয়ে যান রাহুল। হার্দিক পান্ডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ৫২ বল আগেই তুলে নেন জয়। লোকেশ রাহুল ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন। মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি হলো তার।

এর আগে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমেই অস্বস্তিতে পড়ে অজিরা।

খেলার মাত্র ২ ওভার ২ বলেই শূন্য রান করে জাসপ্রিত বুসরার শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মার্শ। দলীয় ৫ রানেই ভাঙে অজিদের ওপেনিং জুটি।

স্মিথকে নিয়ে ডেভিড ওয়ার্নার দলের হাল ধরার চেষ্টা করেছেন। কিস্তু ভারতীয় বোলারদের বোলিং তোপে ওভারে মাত্র ৪ রান করেই নিতে পারছিলেন তারা। তারপরও এই দুই ব্যাটারের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছিল।

কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার কুলদ্বীপ যাদবের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভাঙে এই দুই জনের জুটি। দলের সংগ্রহ তখন ৭৪ রান। ৫২ বলে ৪১ রান করে ফিরে যান ওয়ার্নার।

এরপর মার্নাশ ল্যাবুশেনকে নিয়ে একাই লড়তে থাকেন স্টিভ স্মিথ। কিন্তু ওভার প্রতি চারের বেশি রান নিতে সক্ষম হচ্ছেন তারা তারা। উইকেট ধরে রেখে রান বাড়িয়ে দলের বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করছিলেন তারা।

কিস্তু দলীয় ১১০ রানে জাদেজার বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান স্টিভ স্মিথ। হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা স্মিথ ৭১ বলে ৪৬ রান করে ফিরে যান।

স্মিথের বিদায়ের পর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি ল্যাবুশেন। জাদেজার শিকার হয়ে তিনিও ফিরে যান। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৪১ বলে ২৭ রান।

১১৯ রানে জাদেজার তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান অ্যালেক্স ক্যারি। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান তিনি।

২৫ বলে ১৫ রানে কুলদ্বীপ যাদবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দলীয় ১৪০ রানেই ৬ উইকেট হারায় অজিরা।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের পর ২০ বলে ৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ক্যামেরুন গ্রিন। মিচেল স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন প্যাট কামিন্স। কিন্তু দলীয় ১৬৫ রানে জাসপ্রিত বুমরার দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ট্যাট কামিন্স। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ১৫ রান করেন।

প্যাট কামিন্সের বিদায়ের মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জাম্পা ২৪ রানের জুটি গড়েন। ২০ বলে ৬ রান করে অ্যাডাম জাম্পা হার্দিক পান্ডিয়ার বলে আউট হয়ে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। দলীয় ১৮৯ রানে নবম উইকেট হারায় অজিরা।

এরপর মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড মিলে চেষ্টা করেও আর বেশি রান যোগ করতে পারেনি স্কোর বোর্ডে। সিরাজের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ৩৫ বলে ২৮ করা স্টার্ক। যার ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারের তিন বল বাকি থাকতেই ১৯৯ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া।

ভারতের হয়ে রবীন্দ্র জাদেজা তিনটি, জাসপ্রিত বুমরা ও কুলদ্বীপ যাদব দুইটি এবং মোহাম্মদ সিরাজ, হার্দিক পান্ডিয়া ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন একটি করে উইকেট নেন।

(ঢাকাটাইমস/০৮অক্টোবর/এনবিডব্লিউ/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :