তফসিল বাতিলের দাবির প্রতিবাদ ৩৮৫ সাবেক ও বর্তমান সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:২৯ | প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:১৭

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার দেওয়া বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৩৮৫ জন সরকারি-বেসরকারি সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।

এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রদূত, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মূখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সাবেক আইজিপি, সাবেক ও বর্তমান সচিব, বাংলাদেশের ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাবেক উপাচার্য, স্থপতি, শিক্ষাবিদসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

তারা বলছেন, তফসিল বাতিলের দাবিতে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা যে বিবৃতি দিয়েছেন তা বস্তুনিষ্ঠ নয়। সেই বিবৃতিতে যেসব তথ্য-উপাত্তের উল্লেখ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।

শুক্রবার এক প্রতিবাদলিপিতে এসব কথা বলেন তারা।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। কমিশন এই তফসিল ঘোষণার পূর্বে কমিশনের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কমিশনের এই আহবানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও সমমনা দলগুলো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি। এমনকি তাদেরকে কমিশন থেকে পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা সে আলোচনায় সাড়া দেয়নি, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও বহুবার তাদের আহবান জানানো হয়। কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত না করে সরকারের পদত্যাগের জন্য আন্দোলন, আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা, কর্তব্যরত পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করে নিহত পুলিশের হেলমেট খুলে চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপানো, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হাসপাতালসহ অন্যান্য স্থাপনায় নাশকতা করে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘এই একই মহল নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য ২০১৪ সালেও একইভাবে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সড়কপথে বৃক্ষকর্তন, নির্বাচন অফিসসমূহে অগ্নিসংযোগ, ভোটারদের নির্মমভাবে প্রহার-এমনকি কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসারকে ব্যালট বাক্সের উপরে কুপিয়ে হত্যা করার মতো নৃশংস ও বর্বরোচিত ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এখনও সেই একই মহল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তাকে একতরফা নির্বাচন তফসিল বলে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি করছে। ঘোষিত তফসিল কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযোজ্য এবং উম্মুক্ত। তাহলে কীভাবে এই তফসিল একতরফা হয় এবং কীভাবে অবসরপ্রাপ্ত কিছু সরকারি কর্মকর্তা কমিশনের সংবিধান সম্মত তফসিলকে এক তরফা তফসিল হিসেবে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের জন্য সুপারিশ করেন তা সর্বসাধারণের কাছে বোধগম্য নয়। এই প্রয়াস বাংলাদেশকে একটি সাংবিধানিক শূন্যতার দিকে ঠেলে দেওয়ার নামান্তর।’

বিবৃতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় প্রবর্তনের বিষয়ে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো দলের একক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দাবিকে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিট’ বলে চালিয়ে দেওয়া ‘একতরফা’ বিষয়। তাছাড়া বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি, যাতে এর প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাকে ২০০১ সালে ষড়যন্ত্ৰ করে প্রাথমিকভাবে বিতর্কিত করেছে এবং ২০০৬ সালে বিবিধ পদক্ষেপের মাধ্যমে এক এগারোর সৃষ্টি করে তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দুই বছরের দীর্ঘ একটি অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশের জনগণ এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নবম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের নিমিত্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে।

প্রতিবাদলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন যারা-

রাষ্ট্রদূত একেএম আতিকুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ, মো. আব্দুল হান্নান, সোহরাব হোসেন, মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, চৌধুরী ইখতিয়ার মমিন, মাহবুব উজ জামান, এটিএম নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. রফিকুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী, মো. আব্দুস সামাদ, মো. আব্দুস সামাদ, মোহাম্মদ শহীদুল হক, মো. শামসুল আরেফিন, মাহবুব আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, শুভাশীষ বোস, মো. আমিনুল ইসলাম খান, শামসুল আরেফিন, মিস সুরাইয়া বেগম, নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশের ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, সাবেক আইজিপি এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ নুরুল হুদা, সাবেক আইজিপি ও রাষ্ট্রদূত ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, একেএম শহীদুল হক, ড. বেনজির আহমেদ, মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন মিয়া, মো. আবুল কাশেম হাওলাদার, এম সানাউল হক, সাবেক সচিব মো. আবুল মনসুর, মো. নুর উর রহমান, কামাল উদ্দিন তালুকদার, মো.মামুনুর রসিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, মো. রওনক জাহান, রেজাউল হাসান, ইব্রাহীম হোসেন খান, মেজবাহ উল আলম, জ্যোতির্ময় দত্ত, মেজর জেনারেল (অব.) আলাউদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ, শিকদার মো. সাহাবুদ্দিন, মো. আব্দুর রশিদ, নাসির উদ্দিন, মো. সালাহউদ্দিন মিয়াজী, মোহাম্মদ তৌহিদ-উল-ইসলাম প্রমুখ।

এছাড়া আরও রয়েছেন, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়া, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. ইকবাল আর্সলান, স্থপতি ও লেখক ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

স্বাক্ষরকারীদের তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/এইচএম/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

রাত পোহালে ভোট, ১৫৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬০৩ জন

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রশংসায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি

কিরগিজস্তানে ভালো আছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিদেশে গিয়ে কাগজপত্র সত্যায়নের ঝামেলা আর থাকছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আসছে বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক, মূল্যমান ১ লাখ মার্কিন ডলার

তিন বিভাগে ১-২ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমার আভাস, সাগরে লঘুচাপের শঙ্কা

সিইসির মাসিক বেতন ১ লাখ ৫ হাজার, অন্যদের যা নির্ধারিত হলো

বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষ সংরক্ষণে গবেষণা বৃদ্ধি করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী

জাতীয় খেলা কাবাডি ক্রমেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত হচ্ছে: আইজিপি

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতে জাইকা ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মশালা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :