ট্রেনে বৃদ্ধ যাত্রীকে মারধর ঘিরে উত্তেজনা, পাওয়ার কার অপারেটর সাময়িক বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাসিন্দা ফুল মিয়া (৬২) নামের এক বৃদ্ধকে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ভেতর রেলওয়ের এক কর্মচারী মারধর করায় তুলকালাম ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃদ্ধকে মারধরের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে রবিবার বিকেলে কসবা রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হন।

ফুল মিয়া কসবা উপজেলার সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা।

মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত রেলওয়ের কর্মচারী কাউসার মিয়াকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি ট্রেনের পাওয়ার কার অপারেটর হিসেবে কর্মরত।

উপজেলা প্রশাসন ও কসবা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ফুল মিয়া রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেন।

তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আসতে আসনবিহীন একটি টিকিট কেটে ট্রেনের পাওয়ার কার বগিতে অবস্থান করেন। একপর্যায়ে সেখানে তিনি ফাঁকা জায়গায় বসে পড়েন। বেলা আড়াইটার দিকে ট্রেনটি চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথের ফেনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পৌঁছে। সেসময় ট্রেনে থাকা পাওয়ার কার অপারেটর কাউসার মিয়া এগিয়ে গিয়ে টিকেট আছে কি না ফুল মিয়ার কাছে জানতে চান। আসনবিহীন টিকেট আছে বলে ফুল মিয়া জানান। সেখানে বসে থাকার জেরে ফুল মিয়ার কাছে ২০০ টাকা চান কাউসার। টাকা না দেওয়ায় কাউসার এক পর্যায়ে ওই বৃদ্ধকে মারধর শুরু করেন। মারধরের পর বৃদ্ধ ফুল মিয়ার কাছে ঘটনাটি শুনে মুঠোফোনে ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করেন ট্রেনে থাকা কসবার আরেক যাত্রী। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে কসবা রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হন। বৃদ্ধ যাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউসারকে আটক করেন ট্রেনের গার্ড।

এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ছামিউল ইসলাম, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কসবা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ট্রেনটি কসবা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। স্থানীয় লোকজন ও ট্রেনের পরিচালকসহ অন্যদের কথামতো কাউসারকে বৃদ্ধ ফুল মিয়ার কাছে ক্ষমা চান। কাউসারকে বরখাস্ত করা হয়েছে জানালে স্থানীয়রা শান্ত হন। পরে ট্রেনটি বিকেল পাঁচটার দিকে কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যান।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ছামিউল ইসলাম জানান, ট্রেনের এক কর্মচারী কসবা উপজেলার এক বৃদ্ধ যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণসহ তাকে মারধর করেন। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। স্থানীয় জনতা, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা একত্র হয়ে কসবা রেলওয়ে স্টেশন জড়ো হন। এটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা বলে স্থানীয়দের শান্ত করেছি। ট্রেনের ওই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা শান্ত হন। পরে ট্রেনটি কোনোরকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই কসবা স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

(ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/এফএ)