‘কুমড়া বড়ি’তে ঘুরছে নন্দীগ্রামের অর্থনীতির চাকা

মুনিরুজ্জামান মুনির, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) থেকে
 | প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:০৯

ডালের তৈরি সুস্বাদু কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নারী কারিগররা। শীতকালে এই অঞ্চলের নারীরা কুমুর বড়ি তৈরি করে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেছে। সেই সাথে গ্রামীণ অর্থনীতিতে নীরবে রেখে যাচ্ছে অবদান।

কুমড়া বড়ি একটি সুস্বাদু খাবারের নাম। বিভিন্ন রকম তরকারির সাথে এ খাবার এনে দেয় ভিন্ন রকমের স্বাদ। প্রায় সব শ্রেণির মানুষ কুমড়া বড়ির প্রতি আকৃষ্ট। তবে, কবে এই কুমুর বড়ি তৈরি এবং কীভাবে এর নামকরণ করা হয়েছিল সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও একসময় দেশের অভিজাত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা কুমড়া এবং ডালের মিশ্রণে এটি তৈরি করত বলে এর নাম কুমড়া বড়ি। এককালের শখের খাবার থেকে উৎপত্তি হওয়া কুমড়া বড়ি এখন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে হাজারও নারীর।

আর শীতকালে এ সুস্বাদু খাবার কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নারী কারিগররা। নন্দীগ্রাম উপজেলা তথা বগুড়া জেলা এবং আশেপাশের বিভিন্ন জেলার হাট বাজারে ব্যাপকহারে পাওয়া যায় এই সুস্বাদু খাবার কুমড়া বড়ি। কুমড়া বড়ি তৈরির মূল উপকরণ হলো মাসকালাই ও খেসারি ডাল। ডাল প্রথমে রোদে শুকিয়ে যাতায় ভেঙে পরিষ্কার করে তিন থেকে চার ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর ভোররাত থেকে নারী কারিগররা শিল-পাটায় ডাল মিহি করে গুঁড়ো করার পর তা দিয়ে কুমড়া বড়ি তৈরি করেন। কুমড়া বড়ি তৈরির পর এক থেকে দুই দিন রোদে শুকাতে হয়। রোদে শুকানোর পর খাবার উপযোগী হলে তা বাজারে বিভিন্ন দোকানে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করা হয়।

একজন কারিগর প্রতিদিন তিন কেজি ডালের কুমড়া বড়ি তৈরি করতে পারে। গ্রামের নারী কারিগররা মৌসুমি খাদ্য হিসেবে এবং সংসারের বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়া বড়ি তৈরি করে থাকেন। উপজেলার হাটধুমা, চানপুর, কল্যাণগর, নুন্দহ, কয়াপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কুমুর বড়ি তৈরির ধুম পড়ে গেছে।

উপজেলার হাটধুমা গ্রামের জাহানারা বেগম ঢাকাটাইমসকে জানান, মাসকালাই থেকে তৈরি আসল কুমড়া বড়ি প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। অন্যান্য মানের কুমড়া বড়ি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে কুমুর বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই মাসে যতটুকু কুমড়া বড়ি উৎপাদন করা হয় তা বছরজুড়ে বিক্রি হয়। এই উপজেলা ছাড়াও আশপাশের এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে কুমড়া বড়ি কিনে নিয়ে যায়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন ঢাকাটাইমসকে জানান, উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে এই সুস্বাদু খাবার কুমড়া বড়ি তৈরি করছে গ্রাম্য বধূরা। নারীরা মৌসুমি খাদ্য হিসেবে এবং সংসারের বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়া বড়ি তৈরি করে থাকে। তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :