কাদেরেই আস্থা শেখ হাসিনার

নবমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নামটি নিশ্চিত থাকলেও দলটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে ২১তম সম্মেলন ঘিরে সবচেয়ে বেশি গুঞ্জন ছিল সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরই পুনঃনির্বাচিত হলেন। পরবর্তী তিন বছরের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন।
ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণার আগ পর্যন্ত দলটির এই গুরত্বপূর্ণ পদে কাকে বসানো হচ্ছে সেটা একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ জানেন না বলে দলটির জ্যৈষ্ঠ নেতারা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান। তবে তাদের অনেকেরই ধারণা ছিল পদটিতে নতুন মুখ আসবে।
দলের ২০তম সম্মেলনে প্রথবারের মতো সাধারণ সম্পাদক করা হয় ওবায়দুল কাদেরকে। তিনি দলটির প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর ২১ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে ব্যক্তিগত জীবনে ছাত্ররাজনীতি করা ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন।
২০০২ সালে আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে এক-এগারোর সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দেড় বছর কারাগারে ছিলেন তিনি। কারামুক্তির পর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। এরপর তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার প্রায় তিন বছর পর ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপি–বিহীন নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান কাদের।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে ওবায়দুল কাদের আবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হন। তবে গত মার্চে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পরে দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরেন।
(ঢাকাটাইমস/২১ডিসেম্বর/এনআই/জেবি)

মন্তব্য করুন