প্রাথমিক বৃত্তির সংশোধিত ফলাফল: ছোট্ট বুকে দীর্ঘ শ্বাস

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০২৩, ২২:৪৭

১১ বছর বয়সী এই ছোট্ট শিশুটি এখন লজ্জায় ঘর থেকে বের হয় না। একদিন আগেও তিনি বন্ধু, স্বজনদের ডেকেডেকে মিষ্টি মুখ করিয়েছেন। মুঠোফোনে সবাইকে খুশির খবর জানিয়েছেন। তার বাবা আত্মীয়-স্বজনরা তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে পোস্ট করেছেন। পরিবার জুড়ে যেন এক খুশির হাট। কিন্তু একদিন না যেতেই সব আনন্দই যেন বিষাদে রূপ নিয়েছে পরিবারে। ছোট্ট এই শিশুটির বুকজুড়ে এখন শুধুই দীর্ঘ শ্বাস।

শিশুটির নাম নুর আলামিন। নুর আলামিন চলতি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ২৮ ফেব্রুয়ারির যে ফলাফল ঘোষণা করা হয়, সেই ঘোষণায় ট্যাল্টেন্টপুলে বৃত্তি পায়। কিন্তু ১ মার্চ বুধবার সংশোধিত ফলাফল ঘোষণায় তার বৃত্তি মেলেনি।

নুর আলামিন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের উত্তর কালাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তার শ্রেণি রোল ৬ এবং বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় রোল ছিল ৭৩৬। বর্তমানে নুর আলামিন কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়াশোনা করছে।

নুর আলামিন জানায়, আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার মায়ের মুঠোফোনে কল দিয়ে জানান- আমি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। এরপর আমি মুঠোফোনে নিজেও দেখেছি। শুধু আমি যে খুশি তা নয়। আমার মা-বাবা সবাই খুশি হয়ে ফলাফল সবাইকে জনিয়েছেন। বন্ধু, প্রতিবেশীদের, স্যারদের মিষ্টি মুখ করিয়েছেন। কিন্তু একদিন না যেতেই আমি জানতে পারি সংশোধিত ফলাফলে আমার নাম আসেনি।

শিশু নুর আলামিন এ বলেই কান্না করে জানায়, আঙ্কেল আমার মন ভালো নেই।

নুর আলমের বাবা জামাল মৃধা (৪৯) বলেন, আমার ছেলে বৃত্তি পাওয়ায় অনেক খুশি হয়েছিলাম। আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। যদি সে বৃত্তি নাই পেত, তাহলে আগে কেন দিল, কেন আমার ছেলের মনটা ভেঙে দিল? ছেলেটি এখন ঘর থেকেই নামছে না। ওকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।

তার মা শিখা বেগম অঝোরে কেঁদে দিয়ে বলেন, আমি এটা মানতে পারিনি। বাংলাদেশের এ কেমন শিক্ষাব্যবস্থা। শিশুটির মুখের দিক তাকাতে পারছি না। আমি ফলাফল পুনরায় সংশোধিত ঘোষণা দাবি করছি।

উত্তর কালাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমিন বলেন, নুর আলামিন নিঃসন্দেহ ভালো ছাত্র। কিন্তু প্রথম ঘোষিত ফলাফল বিতর্ক ছিল। যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি, তারাও বৃত্তি পেয়েছে। এমনকি যারা সঠিকভাবে পড়াশোনা করেনি, তারাও বৃত্তি পেয়েছে। তাই সংশোধিত ফলাফলে যে নাম এসেছে সেগুলোই সঠিকভাবে এসেছে বলে আমি মনে করি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিউল ইসলাম বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে ফলাফল সমস্যা হয়েছিল। এখন যেটা সেটাই সঠিক।

(ঢাকাটাইমস/০২মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :