স্পেনে হামলার পর আতঙ্কে মুসলমানরা

ইউরোপ ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৭, ০৯:৩৫ | প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০১৭, ০৯:৩২

‘সন্ত্রাসীরা মুসলিম হতে পারে না, তারা সন্ত্রাসী। ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমরা বার্সেলোনার জন্য শোক জানাচ্ছি।’ স্পেনের বার্সেলোনার লাস রামব্লাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে শোকর‌্যালিতে অংশ নেয়া এক মুসলিম নারীর হাতে ধরা প্লাকার্ডে লেখা ছিল এই কথাগুলো। তার মতো শতাধিক মুসলিম নারী-পুরুষ সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানাতে হাজির হন শোকর‌্যালিতে।

তবে একইসঙ্গে তারা কিছুটা আতঙ্কিত। কারণ বার্সেলোনা ও ক্যামব্রিলসে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুইটি সন্ত্রাসী হামলায় ১৪ জন নিহতের ঘটনায় যারা অভিযুক্ত এদের সবাই মুসলিম। একারণে এরই মধ্যে স্পেনের স্থানীয় জনগোষ্ঠী মুসলমানদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব দেখাতে শুরু করেছে। মুসলমানদের প্রতি কিছু অসৌজন্যমূলক ঘটনাও ঘটে গেছে গত দুইদিনে।

স্পেনে প্রায় ১৯ লাখ মুসলমানের বাস। এতদিন ধর্ম-বর্ণের সহিষ্ণুতার মধ্যে এবং অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশেই বসবাস করছিলেন দেশটির মুসলিমরা। গত দুইদিনে সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতিতে ধরা পড়ছে কিছু পরিবর্তন।

বার্সেলোনার মুসলিম অধ্যুষিত রাভালের একটি মসজিদের ইমাম রাজা মিয়া বলেন, সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছে। রাভালের ব্যস্ত ও জনাকীর্ণ রাস্তা এখন ছমছমে। কোনো শব্দ যেন কোথাও নেই।

নয় বছর আগে বাংলাদেশ থেকে স্পেনে পাড়ি জমানো রাজা মিয়া জানালেন, স্প্যানিশরা আমাদের সঙ্গে এতদিন ভালো ব্যবহার করেছে, তারা আমাদের সাহায্য করেছে। মনে হতো নিজ দেশেই আছি। কিন্তু এখন পরিবেশ বদলে যাচ্ছে। এই তো গতকালই রাস্তায় আমাকে মুখে দাড়ি, পরনে জোব্বা দেখে পুলিশ থামিয়ে দিল। তল্লাশি চালাল। এতে কিছুটা খারাপ লাগল। বার্সেলোনা, ক্যামব্রিলসহ স্পেনের অনেক শহরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মরক্কোসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। সন্ত্রাসী হামলার পর সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ বাড়ির বাইরে যাচ্ছে না। এমনকি নামাজ পড়তে আসা লোকজনও কমে গেছে।

বার্সেলোনায় বসবাসরত মরক্কোর এক নারী বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে তিন মুসলিম নারীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এক ব্যক্তি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে বাজে ভাষায় গালি দেয়। হামলার পর স্পেনে মুক্ত ও উদার মানসিকতা শেষ হয়ে গেছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বার্সেলোনায় গাড়ি হামলা এবং শুক্রবার ভোরে ক্যামব্রিলসে হামলায় মোট ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

এসব হামলায় দায়ীদের সবাই মরক্কোর নাগরিক। হামলার সন্দেহজনক মূলহোতা ইউনুস আবুইয়াকুব (২২) পালিয়েছে। ইউরোপজুড়ে তাকে খোঁজা হচ্ছে। খোঁজা হচ্ছে বার্সেলোনার রিপল এলাকার এক মসজিদের সাবেক ইমাম আবদেল বাকিকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই ইমামও হামলার মূল হোতা হতে পারে ।

স্পেনে মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ জনের যে দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপ বার্সেলোনায় হামলা চালিয়েছিল, তারা ছয় মাস ধরে এ হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এছাড়া হামলার ব্যাপকতা বাড়াতে ভ্যানে ব্যবহারের জন্য তারা ১২০টি গ্যাস সিলিন্ডার জমা করেছিল। রবিবার কাতালানিয়ার পুলিশ প্রধান জোসেপ এললুইস ট্রাপেরো এতথ্য জানান।

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/জেএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাফাহতে আক্রমণ চালাবে ইসরায়েল

গাদ্দার বলেছিলেন মমতা, দেরিতে হলেও পাল্টা দিলেন মিঠুন

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতিতে বড় সুবিধাভোগী উত্তর-পূর্ব ভারত: জয়শঙ্কর

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ইইউর দেশগুলো 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫ ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র

আটলান্টিক মহাসাগরে নৌকাডুবিতে ৫১ অভিবাসী নিখোঁজ

প্রিন্টার, জৈব কালি দিয়ে তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম ‘রক্তনালি’!

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে ৪ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

পেরুতে পাহাড়ি রাস্তা থেকে বাস খাদে পড়ে নিহত ২৫

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :