মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করছে মাল্টিটাস্কিং

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:৫২

ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের ব্যস্ততার শেষ নেই৷ সেইসঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ‘মাল্টিটাস্কিং’ বা একসঙ্গে একাধিক কাজ সারার চাপ তো রয়েছেই৷ আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে তা সামাল দিচ্ছে, বিজ্ঞানীরা তা জানার চেষ্টা করছেন৷

অতীতে মানুষের মস্তিষ্ক খেলাচ্ছলে বেশিরভাগ উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারত৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের সামনে চ্যালেঞ্জ বেড়ে চলেছে৷ আগে শুধু ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে আমরা আরও ঘনঘন তথ্য পেতাম৷

আজকের ডিজিটাল জগতে সবকিছু ও সবাই এক নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে পড়েছে বলে মনে হয়৷ ফলে আমাদের মস্তিষ্ককে অবিরাম উদ্দীপনার ঢেউ সামলাতে হচ্ছে৷ এমন পরিস্থিতি কিন্তু মোটেই আদর্শ নয়৷ খবর ডয়চে ভেলের।

স্নায়ুবিজ্ঞানী ইয়ানা ফান্ডাকোভা বলেন, ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে একটি উদ্দীপক আমাদের কাছে আসে৷ ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে এক প্রক্রিয়া চলে৷ তারপর পরবর্তী উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হয়৷’

কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সেই সুযোগ পান না৷ তাদের অবিরাম তথ্যের বন্যার মুখে পড়তে হয় এবং অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ সারতে হয়৷ মস্তিষ্ক কীভাবে এই চাপ সামলায়, স্নায়ুবিজ্ঞানী হিসেবে ইয়ানা ফান্ডাকোভা তা জানতে চান৷

তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন৷ তাদের সামনে কিছু কঠিন দায়িত্ব ছিল৷ পরীক্ষার সময় তাদের এই সব দানবের মধ্যে ৯টি পার্থক্য শনাক্ত করতে হয়েছিল৷ একই সময় বিভিন্ন বোতাম টিপে সঠিক বৈশিষ্ট্য বেছে নিতে হয়েছিল৷ কঠিন এই কাজের সময় গভীর মনোযোগের প্রয়োজন৷

এর মাধ্যমে ইয়ানা এমন এক পরিস্থিতির নকল করেছেন, যা আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততায় ভরা জীবনযাত্রায় দেখা যায়৷ আমাদের পরপর ও দ্রুত বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়৷

স্বেচ্ছাসেবীরা কত দ্রুত সহজ কাজগুলি করতে পারেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সবার আগে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ তারপর তাদের আরও দ্রুত গতিতে আকার-আকৃতি, রং ও নক্সার প্রতি নজর দিতে হয়৷

ইয়ানা ফান্ডাকোভা বলেন, ‘এগুলি এমন পরিস্থিতি, যখন মস্তিষ্ককে বিভিন্ন কাজ আলাদা করতে হয়৷ এসব কাজ সাধারণত আমরা অবচেতন মনেই করি৷ কিন্তু নেপথ্যে আমাদের মস্তিষ্ক কঠিন পরিশ্রম করে৷’

ইয়ানা পরীক্ষার সময় স্ক্যানারের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবীদের উপর নজর রাখেন৷ তিনি সরাসরি তাদের মস্তিষ্কে উঁকি মেরে দেখতে চান, মস্তিষ্কের কোন কোন অংশ সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ যেমন খুব জটিল কাজের সময় ফ্রন্টাল লোব এর প্রয়োজন পড়ে৷ ইয়ানা বলেন, ‘মস্তিষ্কের এই অংশ ঠিক কপালের পেছনে রয়েছে৷ কোন কাজের জন্য কতটা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে, এই অংশই তা স্থির করে দেয়৷ যেসব পরিস্থিতিতে আমাদের একই সময়ে একাধিক কাজ করতে হয়, তখন নির্বিঘ্নে কাজগুলি সম্পন্ন করতে মস্তিষ্কের এই অংশকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়৷’

শিশু ও কিশোররা এমন কাজ কীভাবে সামলায়? তারা এমন এক জগতে জন্মগ্রহণ করেছে, যেখানে প্রতিদিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা কাজ করতে হয়৷ তারা কি প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবীদের তুলনায় আরও দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে? ইয়ানা ফান্ডাকোভা মনে করেন, ‘আমাদের ও অন্যান্য বিভিন্ন গবেষণার ফল বলছে, যে এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের সাড়া দিতে একটু বেশি সময় লাগে৷ তারা বড়দের তুলনায় সত্যি ঘনঘন ভুল করে৷’

দ্রুত ও পর পর কাজ বদল করলে ফ্রন্টাল লোব বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বাম দিক ও শিশুদের ক্ষেত্রে ডান দিক সেই কাজ করে৷ ২০ বছর বয়স পর্যন্ত ফ্রন্টাল লোব এর বিকাশ চালু থাকায় শিশুরা বড়দের মতো এত দ্রুত বিভিন্ন ধরনের কাজ সামলাতে পারে না৷

বেড়ে চলা চাপ মস্তিষ্কের বিকাশের উপর ঠিক কতটা প্রভাব ফেলছে, তা জানতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগবে৷ স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের সঙ্গে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম প্রাপ্তবয়স্ক হলে সেই রহস্যের সমাধান হতে পারে৷

ঢাকা টাইমস/১৫এপ্রিল/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

নির্বাচিত খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচিত খবর এর সর্বশেষ

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন মাদ্রাসায় পড়ুয়া মাজিদুল হক

মুন্সীগঞ্জে ১০ কোটি টাকার পানি শোধনাগার কাজেই আসছে না

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে সৌর বিদ্যুৎ দিচ্ছে ‘সোলার ইলেক্ট্রো’

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ৯ দাবি বাস্তবায়ন চায় শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ

শিশু নির্যাতন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং র‌্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান

শহরের ব্যস্তজীবনে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ড. রাশেদা রওনকের আলোচনায় আমন্ত্রণ

২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের করোনা শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত

দা‌ড়ি-গোঁফ গজাচ্ছে জান্না‌তির মুখে, প‌রিবর্তন হয়েছে কণ্ঠস্বর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :