মনদীপের বই বিক্রির টাকা ব্যয় হবে বৃদ্ধাশ্রমে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৪৬

‘প্রবীণ হিতৈষী সংঘের' প্রবীণ ভবনে সোমবার লেগেছিল উৎসবের হাওয়া। অনেক অনেক দিন পর এদিন প্রবীণ ভবন নিবাসী বৃদ্ধ মায়েদের মুখে এক চিলতে হাসির দেখা মিলেছে। কারণটা বেশ খানিকটা অবাক করার মতোই। তরুণ কথাসাহিত্যিক মনদীপ ঘরাইয়ের উপন্যাস ‘ফুঁ’ এর মোড়ক উন্মোচন হয়েছে এখানে। তরুণ এই লেখক তার মাকে সঙ্গে করে এসেছিলেন বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় মায়েদের পাশে।

এসব মাকে সঙ্গে নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন মনদীপ ঘরাইয়ের মা বাসন্তী ঘরাই। এখানেই শেষ নয়, সেই সঙ্গে ছিল আরও একটি উদ্যোগের ঘোষণা। বইটির লেখকের লভ্যাংশের পুরোটাই ব্যয় হবে এই প্রবীণ নিবাসের বৃদ্ধ মায়েদের কল্যাণে।

এরকম উদ্যোগ এর আগেও নিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই। তার গল্পগ্রন্থ 'অল্প গল্প' এর মোড়ক উন্মোচন করেছিল তিনজন পথশিশু। সেই বইয়ের লভ্যাংশের ২১ ভাগ উৎসর্গ করা হয়েছিল সেই তিনজন পথশিশুর জন্য। আর এবার তিনি লভ্যাংশের পুরোটাই দিচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমের জন্য।

এ বিষয়ে লেখক মনদীপ ঘরাই বলেন, লেখালেখিটা করি অন্তরের টান থেকে। তা থেকে যদি মানুষের জন্য কিছু করা যায়, সেটাই আমার প্রাপ্তি। আর মেলার একদম শেষে এসে কেন মোড়ক উন্মোচন করছি এ কথা অনেকেই জিজ্ঞেস করেছেন। উত্তরটা। এবার বলি, এ সময় মেলা প্রায় শেষ; এখন উদ্যোগের ঘোষণাটা দিলাম যাতে উদ্যোগের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কেউ বই না কেনে। শুধু পাঠকেরাই বই কিনুক। তাহলেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক।

তিনি বলেন, আমার মা আমার কাছে অনেক বড় কিছু। যে মায়েদের সন্তান পাশে নেই, তাদেরকে একটা বার্তা দিতে চাই, আমি সাধ্যমতো আপনাদের পাশে আছি। সন্তান হয়ে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক পর্যায়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি লেখক। উপস্থিত অনেকেই তার সঙ্গে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক লেখকের মা বাসন্তী ঘরাই বলেন, ভাবতেই ভালো লাগছে আমার ছেলে এত সুন্দর একটা উদ্যোগ নিয়েছে। জীবনে আমার সবচেয়ে সেরা পাওয়া।

বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপক সজীব দত্ত নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে, এ ধরনের কার্যক্রম আমাদের স্বপ্ন দেখায় সুন্দর আগামীর। এ উপন্যাসটিতে লেখক অত্যন্ত সুনিপুণভাবে সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।

নিবাসের অধিবাসী একজন মা রাশিদা বলেন, এমন অনুষ্ঠানের কথা চিন্তাও করিনি কখনো। লেখকের আবেগঘন কথা শুনে আমরাও চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি।

অনুষ্ঠান শেষে লেখকের সঙ্গে প্রবীণ হিতৈষী সংঘের মায়েরা মধ্যাহ্নভোজনে অংশগ্রহণ করেন। এ যেন স্বপ্নলোকের কোনো মিলনমেলার দৃশ্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।

(ঢাকাটাইমস/২৪ফেব্রুয়ারি/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :