ইরফান খানের উত্থানের গল্প

বিনোদন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৪৪

বলিউড, ব্রিটিশ ভারতীয়, হলিউড এবং তেলেগু ছবিতে অভিনয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত নাম ইরফান খান। ৩৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি ৫০টির অধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও চারটি ফিল্মফেয়ার-সহ অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার। চলচ্চিত্র সমালোচক, সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাকে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী বলে গণ্য করেন। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’তে ভূষিত করে।

ইরফান খানের বলিউডে অভিষেক হয়েছিল শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কার পুরস্কারে মনোনীত হওয়া ‘সালাম বম্বে’ ছবির মাধ্যমে। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৮ সালে। এরপর কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে নাট্যধর্মী ‘হাসিল’ ও ২০০৪ সালে ‘মকবুল’ ছবি দুটিতে খল চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সমাদৃত হন। ‘হাসিল’ ছবিটির জন্য শ্রেষ্ঠ খল অভিনয়শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন ইরফান খান।

২০০৭ সালে ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’ ছবিটির সফলতা তার কর্মজীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই ছবিতে ইরফানের অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীড়া নাট্যধর্মী ‘পান সিং তোমার’ ছবিতে পান সিং তোমারের ভূমিকায় অভিনয় করেও তিনি সমাদৃত হন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন।

২০১৩ সালে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে বাফটা পুরস্কার মনোনীত ‘দ্য লাঞ্চবক্স’ ছবিতে ইরফান খানের অভিনয় বৈশ্বিক সমালোচক ও দর্শকদের কাছে দারুণ প্রশংসা অর্জন করে। এরপর তিনি আরও কয়েকটি ব্যবসাসফল ও সমাদৃত ছবিতে অভিনয় করেন। তার মধ্যে রয়েছে ‘হায়দার’ (২০১৪), ‘পিকু’ (২০১৫), ‘তালবার’ (২০১৫) ও ‘ব্ল্যাকমেইল’ (২০১৮)।

ইরফান খান অভিনীত সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি ছবি হচ্ছে ২০১৭ সালের হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী ‘হিন্দি মিডিয়াম’। এটি ভারত ও চীনে স্লিপার হিট তকমা লাভ করে এবং ইরফান শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১২ সালের মার্কিন চলচ্চিত্র ‘অ্যামেজিং স্পাইডার ম্যান’-এ অভিনয় করে তিনি প্রশংসিত হন। এছাড়া তিনি হলিউডের সিনেমা ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’- এও অভিনয় করেছেন।

এত সব খ্যাতি রেখে বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের ধিরুভাই আম্বানি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন ইরফান খান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কোলন ক্যানসারে ভুগছিলেন। ২০১৮ সালে এ জন্য তিনি লন্ডনে এক বছর চিকিৎসাও করান। সুস্থও হয়েছিলেন। সম্প্রতি তার কোলনে সংক্রমণ হওয়ায় আবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু এ যাত্রায় আর ফিরলেন না।

এর আগে গেল শনিবার রাজস্থানের জয়পুরে বাধ্যক্যজনিত কারণে মারা যান ইরফানের মা সাইদা বেগম। কিন্তু সেসময় মুম্বাইয়ে থাকায় এবং ভারতজুড়ে লকডাউন চলায় তিনি মাকে শেষবারের জন্য দেখতে রাজস্থানে যেতে পারেননি। এমনকী, মায়ের শেষকৃত্যও তাকে দেখতে হয়েছিল মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে। সেই ভিডিওতে ইরফানকে কাঁদতে দেখা যায়। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে তার জন্যই কাঁদছে পরিবারের অন্যরা।

ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :