সালমান শাহ পরিবারের আপত্তির মধ্যেও মুক্তি পেল ‘বুকের মধ্যে আগুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:১৫

সালমান শাহ পরিবারের আপত্তির মধ্যেও অনেকটা চুপিসারে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পেল তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’

শাহরিয়ার শাকিল প্রযোজিত এ সিরিজটি প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর মৃত্যু রহস্য নিয়ে নির্মিত বলে এরই মধ্যে কথা উঠেছে। এ খবর সালমানের পরিবারের নজরে আসলে এর মুক্তি আটকাতে সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি সিরিজের নির্মাতাকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন তারা।

তবে এর মধ্যেই অনেকটা চুপিসারে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মুক্তি পেল বুকের মধ্যে আগুন।

সিরিজটি মুক্তি নিয়ে জানতে হইচই বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে কারও ফোন পাওয়া গেছে বন্ধ, কেউ বা ফোন ধরেননি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর একটি ভিডিও অবশ্য আপলোড করা হয় হইচইয়ে। সেখানে এই অভিনেতা বলেন, আরমান রহমান জয়ের ফ্যান হয়েও সে কেইসটির সমাধান করতে পারছেন কি না, দেখতে হলে চোখ রাখুন হইচইয়ে।

সিরিজে এএসপি গোলাম মামুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ছোট পর্দা ও ওটিটির জনপ্রিয় অভিনেতা অপুর্ব। অপূর্ব ছাড়াও ইয়াশ রোহান, আবু হোরায়রা তানভীর, তমা মির্জা, শাহনাজ সুমি, তানিয়া আহমেদ, তৌকীর আহমেদ, তারিক আনাম খান, গাজী রাকায়েতসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন তারকাবহুল এ সিরিজে।

হইচইয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায় আট পর্বের সিরিজটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যার পর্বগুলোর নাম যথাক্রমে- ফিরে আসার গল্প, বন্ধু নাকি শত্রু, চেনা যখন অচেনা, স্নেহের ছলনা, উত্থান-পতন, প্রণয়ের পালাবদল, পতনের প্রস্তুতি, হত্যা নাকি আত্মহত্যা?

সিরিজ সম্পর্কে হইচইয়ের ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, সাফল্যের চূড়ায় থাকা একজন অভিনেতার চমকে দেওয়া আত্মহত্যার কুড়ি বছর পরে এক ভাইরাল ভিডিওর কারণে ন্যায়ের দাবিতে জনতার মধ্যে আবার আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

অভিনেতা কি সত্যি আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি খ্যাতির উজ্জ্বল আলোর ছায়ায় ঘটেছিল অন্য কিছু? এই রহস্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব এসে পড়ে এএসপি গোলাম মামুনের ওপর।

টাইটেলে লেখা হয়েছে, নব্বই দশকে এক সুপারস্টারের আকস্মিক মৃত্যুতে থমকে গিয়েছিল সবাই। মার্ডার নাকি সুইসাইড? আজও মেলেনি প্রশ্নের উত্তর। ফ্যানদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক বছর পর কেসটির পুনঃতদন্তের দায়িত্ব পড়ল এএসপি গোলাম মামুনের ওপর।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ‘হইচই মিট’ নামক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি। তখনই ঘোষণা দেওয়া হয় ‘বুকের মধ্যে আগুন’ ওয়েব সিরিজের। এই কাহিনীর সঙ্গে সালমান শাহর জীবনের ঘটনার মিল সবার চোখেই ধরা পড়ার পর শুরু হয় আলোচনা।

এরপর ‘হইচই’ সিরিজটি মুক্তির ঘোষণা দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারিতে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে বানানো সিরিজে আপত্তি তোলেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ও মামা আলমগীর কুমকুম।

সিরিজটি প্রচার বন্ধের দাবিতে আইনজীবী ফারুক আহমেদের মাধ্যমে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন এ নায়কের মা। সালমান শাহর নামে গান, নাটক, সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আবেদন জানান তিনি।

এছাড়া ‘বুকের মধ্যে আগুন’ নামে ওয়েব সিরিজ নির্মাতা, কলাকুশলী ও অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে অচিরেই ফরমান জারির কথাও জানান নীলা চৌধুরীক। এরপর সালমানের মামা আলমগীর কুমকুম ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মইনুল ইসলামের মাধ্যমে একটি লিগ্যাল নোটিস পাঠান হইচইকে।

সেখানেও বিচারাধীন মামলার বিষয় নিয়ে ওয়েব সিরিজ নির্মাণে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিরিজটি প্রচার বন্ধ করা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এদিকে ঘটনার মিল থাকলেও এই সিরিজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন শিল্পী ও কলাকুশলী বলেছেন, সিরিজের কোথাও নায়ক সালমান শাহর নাম উল্লেখই করা হয়নি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় সালমান শাহর। ঢাকার ইস্কাটনে তার নিজের ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ময়না তদন্ত রিপোর্টে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হলেও তার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের জট এখনও খোলেনি; যদিও একের পর এক সংস্থা তদন্ত করে গেছে ২৬ বছর ধরে। আর পরিবার বরাবরই বলে আসছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এই চিত্রনায়ক।

(ঢাকাটাইমস/৩মার্চ/এলএম/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :