বারাক ওবামাসহ ৫০০ মার্কিন নাগরিকের ওপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ৫০০ মার্কিন নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা রাশিয়া ভ্রমণ করতে পারবেন না। মস্কোর বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। খবর আরটির।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ওয়াশিংটনের এটা শেখার সময় এসেছে যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি আক্রমণও কঠোর প্রতিক্রিয়া ছাড়া ফেরানো হবে না। অনিবার্য শাস্তির নীতিটি ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগ করা হবে, আমরা আমাদের নাগরিকদের পেশাগত ক্রিয়াকলাপকে বাধা দেওয়ার জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা বা বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের কথা বলছি।’
মস্কোতে মার্কিন দূতাবাস রুশ সাংবাদিকদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে রাশিয়ার সরকার ইভান গারশকোভিচের কনস্যুলার ভিজিটের জন্য দূতাবাসের অনুরোধ মঞ্জুর করতে অস্বীকার করেছে। ফলে গত মাসে সাংবাদিকরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে যেতে পারেনি। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সংবাদদাতা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ওবামা ছাড়াও রাশিয়ার কালো তালিকায় কংগ্রেসের অনেক সদস্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর এবং অ্যাটর্নি-জেনারেল, বর্তমানে বিশিষ্ট থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বোর্ডে থাকা প্রাক্তন কর্মকর্তা, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহকারী সামরিক ঠিকাদার এবং এমনকি স্বল্পকালের ‘ডিসইনফরমেশন জার’ নিনা জানকোভিচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়াও তালিকায় সরকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যারা তথাকথিত ক্যাপিটল বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে ভিন্নমতাবলম্বীদের নিপীড়নে সরাসরি জড়িত তারাও রয়েছে বলে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে।
এই বিভাগে উল্লেখযোগ্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে কলাম্বিয়া জেলার জন্য মার্কিন অ্যাটর্নি ম্যাথিউ গ্রেভস, তার পূর্বসূরি মাইকেল শেরউইন, ডিসি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্ল রেসিন এবং ক্যাপিটল পুলিশ অফিসার মাইকেল বার্ড যিনি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী অ্যাশলি ব্যাবিটকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।
ব্ল্যাকলিস্ট করা বাইডেন প্রশাসনের বিশিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী সেক্রেটারি অব স্টেট ফর এনার্জি রিসোর্সেস জিওফ্রে পাইট (২০১৪ সালে ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত); সাবেক স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র জেমস রুবিন এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট সেন্টারের বর্তমান প্রধান; স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সেলর ডেরেক চোলেট; এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সিনিয়র উপদেষ্টা অনিতা ডান।
প্রাক্তন এনবিসি উপস্থাপক ব্রায়ান উইলিয়ামসসহ টিভি হোস্ট জিমি কিমেল, স্টিফেন কোলবার্ট, সেথ মেয়ার্স, রাচেল ম্যাডো এবং জো স্কারবোরোও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিলেন। ইউএসএএফ চিফ অব স্টাফ জেনারেল চার্লস কিউ ব্রাউন জুনিয়রের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সচিব, ক্রিস্টিন ওয়ার্মুথ এবং ফ্রাঙ্ক কেন্ডালও তালিকা তৈরি করেছেন।
তবে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স তালিকার বেশিরভাগ অংশ তৈরি করেছে। প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব এবং মেরিন জেনারেল জেমস ম্যাটিসকে জেনারেল ডাইনামিক্সের বোর্ডে থাকার জন্য এবং সিআইএর প্রাক্তন পরিচালক জর্জ টেনেটকে এজেন্সি ঠিকাদার ইন-কিউ-টেলের বোর্ড সদস্য হিসেবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
রাশিয়ায় প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন টেফ্টকে র্যান্ড কর্পোরেশনের সিনিয়র ফেলো হিসেবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কার্নেগি ফাউন্ডেশনের অনেক কর্মচারীর মধ্যে সিনিয়র রাশিয়া এবং ইউরেশিয়া গবেষক এরিক সিয়ারামেলাও ছিলেন। এছাড়াও রাশিয়ার কালো তালিকার অন্যান্য বিশিষ্ট নামের মধ্যে ছিলেন ইউক্রেনের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী নাটালি জারেস্কো এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক রাশিয়া বিশেষজ্ঞ ফিওনা হিল।
(ঢাকাটাইমস/২০মে/এসএটি)