সোনারগাঁয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০২৩, ১৯:০৭

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী নেকবর হোসেন নাহিদের নারী কেলেঙ্কাকারীর ঘটনা ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি একজন ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সঙ্গে তার একটি যুগলবন্দি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায় একটি দর্শনীয় স্থানে দাঁড়িয়ে তিনি ওই নারীকে বুকে জড়িয়ে রেখেছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় নেকবর হোসেন নাহিদকে নিয়ে এখন রাজনীতির মাঠে আলোচনা তুঙ্গে। নেতাকর্মীরা বলছেন, নেকবর হোসেন নাহিদের মতো অনৈতিক ও নারী লোভী মানুষ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে এলে এটি দলের জন্য বড় দুর্নাম হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সঙ্গে নেকবর হোসেন নাহিদের অবৈধ সম্পর্ক চলছিল। সেই সুবাদে ওই নারীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দর্শনীয় স্থানে গিয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন নেকবর হোসেন নাহিদ। যার ফলে ওই নারীর সংসার জীবনে নেমে আসে অশান্তি। দিকে প্রায় ২০ বছর পর গত ১৭ জুলাই উৎসবমুখর পরিবেশে সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সংঘর্ষ হওয়ার আশংকায় উপজেলা কমিটি ঘোষণা ছাড়াই সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন, দীর্ঘ ১৩ বছর দায়িত্বে থাকা সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কর্মীশূন্য বিতর্কিত নেতা নেকবর হোসেন নাহিদ।

সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের একাধিক রাজনীতিবিদ জানান, কর্মীশূন্য নেতা নেকবর হোসেন নাহিদের জীবনে রাজনীতিতে পথ চলা শুরু হয় ১৯৮৯/৯০ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সফল ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং সদস্য মাহফুজুর রহমান কালামের হাত ধরে। কালাম তাকে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসনাত সাহেবের গার্মেন্টসে চাকরির সুযোগ করে দেন, সেখানে অনৈতিক কারণে তার চাকরি চলে যাওয়ার পর সে হাসনাত সাহেবেরই আপন ছোট ভাই মোশাররফ সাহেবের ঘাড়ে সওয়ার হয়। মোশাররফ সাহেবের ঘাড়ে সওয়ার হওয়ার পর আবুল হাসনাত এবং মোশাররফ সাহেব যখন বহিষ্কার হলেন তখন সে বাহাউল হকের রাজনীতিতে আমদানি হয়।

বাহাউল হকের সওয়ার হয়ে ২০০১ এর পরে প্রথম স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। বাহাউল হক মনোনয়ন না পেলে ২০০৮ সালে যখন কায়সার হাসনাত এমপি হলেন সে কায়সার হাসনাত লোক বনে গেলেন। কায়সার সাহেবের লোক বনে যাওয়ার পরে ২০১৪ সালে যখন কায়সার হাসনাত মনোনয়ন পেলেননা তখন আস্তে আস্তে উনি আবার রাজনীতিতে আবু জাফর বিরুর ঘাড়ে সওয়ার হলেন। বিরুর ঘাড় থেকে এখন আবার পুনরায় সামসুল ইসলাম ভূইয়া যেহেতু উপজেলা চেয়ারম্যান তার ঘাড়ে সওয়ার হয়ে সোনারগাঁয়ে টিকে রয়েছেন।

এ কারণেই নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত এই নেতা সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে ‘গাছ বাওয়া বানর’ হিসেবে পুরো উপজেলায় পরিচিত।

সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, নেকবর হোসেন নাহিদের কোনো ইনকাম সোর্স নেই। যার কারণে তিনি যখন যার সঙ্গেই রাজনীতি করেন তখন তিনি তার কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতন নির্ধারণ করে চলেন।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ রকম একজন নারীলোভী লোকের হাতে নেতৃত্ব গেলে সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে। যিনি জীবনে কখনো কোন মিটিং অথবা জনসভায় ২০/২৫ জনের একটা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তার মতো মানুষের হাতে নেতৃত্ব দেয়া মানে সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগকে গলা টিপে হত্যা করা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নেকবর হোসেন নাহিদকে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমার সম্মান নষ্ট করার কাজে লিপ্ত রয়েছে। মেয়েটি আমাদের এলাকার এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী। ভাইরাল হওয়া ছবিটি সম্পূর্ণ ফেক ও বানানো। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :