ঈদে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মসলাসহ নিত্যপণ্যের দাম

মেহেদী হাসান, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৪৪

রোজার শুরু থেকেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই চাহিদা বাড়ছে নিত্যপণ্যের। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দামও। মাংস রান্নার জন্য বিভিন্ন ধরনের মসলা, সেমাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় চিনি, দুধ, কিশমিশ, পোলাওর চালের দাম যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবুও বাড়তি দামেই নিত্যপণ্য কিনতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে বাজারে।

রবিবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

বাজারের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে প্যাকেটজাত ও খোলা লাচ্ছা ও চিকন সেমাই। নিত্যপণ্য কিনতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর নানা ধরনের সেমাইয়ের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৮০ টাকা। আর প্রাণ কোম্পানির চিকন সেমাই কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম সেমাই ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ২০০ গ্রাম

সেমাই ৫০ টাকা, বনফুল ৫০ টাকা এবং কুলসুম সেমাই ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাহিদা বাড়ায় মসলার দামও বিক্রি হচ্ছে বেশ চড়া।

এলাচ ১ কেজি সর্বোচ্চ ৩২৫০ টাকা, দারুচিনি ১ কেজি সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকা, লবঙ্গ ১ কেজি সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা, জিরা ১ কেজি ৭৫০ টাকা, জয়ফল ১ কেজি ১৩০০ টাকা, জয়ত্রী ১ কেজি ৩৫০০ টাকা, আলুবোখারা ১ কেজি ৫০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ১ কেজি ৩০০০ টাকা, কাজুবাদাম ১ কেজি ১৩০০ টাকা, এছাড়া চিনা বাদাম ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা কেজি দরে। এর মধ্যে এলাচ গত সপ্তাহে ২৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এর দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। এছাড়াও জয়ত্রী বিক্রি হয়েছে ৩৪০০ টাকা ও কাজু বাদাম বিক্রি হয়েছে ১২০০ টাকায়। এক সপ্তাহে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২০০ ও ৫০ টাকা। ঈদে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাও চাল। রমজান মাসের শুরু থেকে বেড়েছে সর্বোচ্চ ২ টাকা। খোলা চিনিগুঁড়া সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত চাল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রামপুরা বাজারের আবিদ খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, খোলা চিনি ১৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ডানো, পুষ্টি, ডিপ্লোমাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধ কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। অন্য কোম্পানিগুলোও দাম বাড়াতে পারে। দামও কোথাও কোথাও কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়তি রাখা হচ্ছে।

দাম বাড়ার কারন জানতে চাইলে আজাদ ফুডকর্নারের স্বত্বাধিকার আফজাল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, সব‌কিছু মি‌লি‌য়ে এবার দাম একটু চড়া পরিবহনের করচসহ। এছাড়াও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

রামপুরা বাজার করতে আসা ক্রেতা রিয়াজ ঢাকা টাইমসকে বলেন, পুরো রোজার মাস ধ‌রেই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে জিনিসপত্র। আর ঈদকে কেন্দ্র করে আবারও বাড়িয়েছে নিত্যপণ্যের দাম। যা অবস্থা হয়েছে আরও দাম বাড়বে। বিভিন্ন ঈদ বা ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি চক্র হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয় বাজারের দাম। এখন বাজারে তদারকি প্রয়োজন অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে।

দা‌মের কোনো কমতি নেই নিয়মিত বাজার মাং‌সের বাজারেও। আগের মতোই প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৯০ টাকায়। মুরগির মাংসের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বে‌ড়ে ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা ও ৫০ টাকা বে‌ড়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। কেজি প্রতি সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৭০ টাকা, আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়।

দাম বাড়ায় অসন্তষ্ট এক ক্রেতা হাসিবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, রোজা শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন সেটা এমন একটা পর্যায়ে আছে যেটা অসহনীয়। ঈদের নামে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। যেটাই কিনতে যাই সেটারই দাম চায় বেশি। কিন্তু এর বিরু‌দ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই।

রামপুরা বাজারের মোরগ বিক্রেতা শান্তি ফার্মের স্বত্বাধিকারী সাহাবুদ্দিন মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‌‌মুরগির উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। ঈদ হওয়ায় চাহিদা বেশি থাকায় সরবরাহ করতে কষ্ট হচ্ছে। মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ৩০ টাকা। অথচ প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা কিনতে হচ্ছে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৬০ টাকা, কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের সেই ফিড কিনতে হয় ৭০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৮০ টাকা।

(ঢাকাটাইমস/০৭এপ্রিল/এমএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :