রাফাহতে হামলার তারিখ নির্ধারণ করেছে ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক চাপকে উপেক্ষা করেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে সামরিক অভিযান চালাতে মরিয়া ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই রাফাতে হামলার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘জয়ের জন্য রাফাহ অভিযান প্রয়োজনীয়। এই অভিযান হবেই। অভিযানের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।’
তবে নির্দিষ্ট তারিখটি প্রকাশ করেননি নেতানিয়াহু।
এদিকে ইসরায়েল রাফাহতে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনার ফলে বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকার শেষ নিরাপদস্থল হিসেবে সেখানে ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন, যা গাজার মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ। কিন্তু তা সস্ত্বেও রাফাহতে স্থল হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র রাফাহতে হামলার বিরোধীতা করেছে। তারা বলেছে সেখানে পূর্ণমাত্রার কোনো সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তাও সংকটে পড়বে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যিনি যুদ্ধের সময় ইসরায়েলকে সমর্থন করেছিলেন- তিনিও বলেছেন, রাফাহতে ইসরায়েলি আক্রমণ একটি বিশ্বাসযোগ্য বেসামরিক সুরক্ষা পরিকল্পনা ছাড়াই ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করা হবে।
যদিও ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন, তারা রাফাহর সাধারণ মানুষের জন্য ৪০ হাজার তাঁবু কিনছেন। যেগুলোতে গাজাবাসীর থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে নেতানিয়াহু রাফাহতে হামলার তারিখ নির্ধারণের কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে অবহিত নয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, রাফাহতে হামলার দিনক্ষণ ঠিক করার ব্যাপারে তাদের কোনো কিছু জানায়নি ইসরায়েল।
অন্যদিকে দক্ষিণ গাজায় মাত্র একটি ব্রিগেড রেখে বাকি সৈন্যদের সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। দেশটির সামরিক বাহিনী রোববার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লার্নার বলেছেন, ‘সৈন্য ফিরিয়ে নেয়াকে যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিত মনে করার কারণ নেই। খান ইউনিসে সামরিক বাহিনী তার মিশন সম্পন্ন করেছে বলে সৈন্যদের সরানো হচ্ছে। এটি যুদ্ধের তৎপরতার আরেকটি পর্যায়।’
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, ‘এটি একটি "রেস্ট অ্যান্ড রিফিট" (বিশ্রাম এবং পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠা) বলে মনে হচ্ছে। এবং নিশ্চিত করে বলা যায় না যে... এই সৈন্যদের দিয়ে নতুন কোনো অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, সৈন্যরা তাদের “ফলোআপ মিশন”- এর জন্য প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, যেকোনো সময় রাফাহতে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। এতে সেখানে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং ব্যপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি
(ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/এমআর)