উদ্দেশ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ
মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিশেষ অর্থ বরাদ্দ

নিজের নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লার মুরাদনগরে সরকারি টাকা ঢালছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এখানকার মসজিদ-মন্দিরে দেওয়া হয়েছে বিশেষ থোক বরাদ্দ। জেলা পরিষদের নামে টাকা বরাদ্দ হলেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে অন্যসব উপজেলা।
এরই মধ্যে মুরাদনগর উপজেলায় বিভিন্ন মসজিদের জন্য দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। মন্দিরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৬৬ লাখ টাকা। অবাক বিষয় হলো, কুমিল্লা জেলা পরিষদের নামে এসব অর্থ বরাদ্দ হলেও বিতরণ হচ্ছে শুধু মুরাদনগর উপজেলায়। অন্যান্য উপজেলা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার হাতে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পক্ষপাতমূলক অর্থ বরাদ্দের উদ্দেশ্য আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
গত বছর নভেম্বরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এরপরই বদলে যেতে থাকেন তিনি। গ্রামীণ এলাকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুর উন্নয়ন দেখভাল করে এই মন্ত্রণালয়। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি হননি তিনি। একারণে উপদেষ্টার পদ ছেড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দেননি। বরং নির্বাচনে অংশ নিতে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে সরকারি টাকায় নিজের এলাকায় শক্ত ভিত গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মুরাদনগরে গঠন করা হয় আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সমর্থক গোষ্ঠী। মুরাদনগর উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হন আসিফের চাচাতো ভাই ওবায়েদউল্লাহ। ভাইয়ের পক্ষে কাজ শুরু করেন তিনি। এছাড়া ছেলের হয়ে প্রচার শুরু করে দেন আসিফের বাবা বিল্লাল হোসেন। প্রথমে ভিজিএফ-এর কার্ডের তালিকা তৈরি ও বিতরণের দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের হাত থেকে অনেকটা ছিনিয়ে নেয় ওবায়েদউল্লাহ লোকজন।
গত জানুয়ারিতে জেলা পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা খাত থেকে কুমিল্লা জেলা পরিষদকে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। এই জেলায় মোট উপজেলা ১৭টি, কিন্তু সব টাকা যায় মুরাদনগর উপজেলায়। এখানকার অর্ধশতাধিক মসজিদে দেওয়া হয় এই টাকা। জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে এমন কোন টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
গত ২৫ মে আবারো জেলা পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা খাতে ৬৬ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবারও এই টাকা গেছে শুধু মুরাদনগরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ২২টি মন্দিরে। আগের মতই বৈষম্যের শিকার অন্য উপজেলাগুলো। একথা ঢাকা টাইমসের কাছে স্বীকার করেন দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান। একই কথা জানান দাউদকান্দির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম।
চান্দিনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদ্য যোগ দিয়েছেন, তাই তিনি কাগজপত্র না দেখে কিছু জানাতে পারেননি। তবে তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বললেন, তার উপজেলায় এ ধরণের কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পক্ষে মুরাদনগরে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা আবার এলাকায় সংগঠিত করছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদেরকে। এছাড়া আওয়ামী লীগ-কৃষক লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাদেরকেও ব্যবহার করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। আর তাদেরকে সকল কাজে সহযোগিতা করছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এমএইচ)

মন্তব্য করুন