ব্যাটসম্যানদের ‘আত্মহত্যার মিছিল’

তামিম জানতেন শর্ট বল আসবে। আর এটাও জানতেন ডিপ স্কয়ার লেগে কেউ না কেউ থাকবেন। সব জেনেবুঝে সাউদির ষষ্ট ওভারে শর্ট বল দিতেই পুল করতে গেলেন। স্যান্টনার একটু মুভ করে বল লুফে নিলেন।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৮৯ রানে অলআউট হয়। নিউজিল্যান্ড ৬৫ রান বেশি করে থামে। তার জবাবে অতিথিরা ব্যাট করতে নেমে ১৬৬ রান তুলতে ৯ উইকেট হারিয়েছে। গতকাল বৃষ্টির কারণে খেলা হয়নি। বাকি আছে আর একটা দিন। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এই ম্যাচেও মান বাঁচবে না বলেই মনে হচ্ছে।
তামিমের (৮) পর রিয়াদের সঙ্গে সৌম্য বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন। দারুণ ব্যাট করছিলেন দুজনে। বোল্টকে চার হাঁকিয়ে ত্রিশের ঘরে পা রাখেন সৌম্য। দুই ওভার বাদে মিডিয়াম পেসার গ্রান্ডহোমকে বলে টানেন উইলিয়ামসন। দুই স্লিপসহ গালিতে সৌম্যর সামনেই ফিল্ডিং সাজান। অনুমিতভাবেই অফসাইডে ঝুলিয়ে বল দেন। দেখেশুনে ওই গালি দিয়েই স্কয়ারকাট করতে যান। ধরা পড়েন রাভালের হাতে।
দুই ওভার বাদে সাকিবও একই কাজ করেন। সাকিব স্কয়ারকাট ভালো খেলেন, এটা সবাই জানে। সাউদি তাই বলে এসে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ফিল্ডার রেখে অফ সাইডে ঝুলিয়ে ডেলিভারি দেন। সাকিব ফাঁদে পা দেন চোখের পলকে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ওৎ পেতে থাকা গ্রান্ডহোম ক্যাচ লোফেন। আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ানকে এদিন ফিরতে হয় ৮ রানে।
এরপর রিয়াদের পালা। দল যখন চাপে ঠিক তখন শরীরের অনেক বাইরের বলে জোর করে ড্রাইভ করতে যান রিয়াদ (৩৮)। বলে সুইং ছিল। কানা নিয়ে স্ট্যাম্প খেয়ে নেয়।
সাব্বির ফিরে যান রানের খাতা খোলার আগেই। দলীয় শত রানের মাথায় ওয়াগনারের শর্ট বলে তালগোল পাকিয়ে ব্যাট দেন। কী করতে চেয়েছিলেন তিনিই ভালো জানেন। না ছেড়েছেন, না ব্যাটে এনেছেন; কিছুই বোঝা যায়নি। তবে বল যে গ্রিপের কাছাকাছি চুমু দিয়ে উইকেটরক্ষক ওয়াটলিংয়ের হাতে পৌঁছে যায়, সেটা বুঝতে কারো সমস্যা হয়নি।
নুরুল হাসান (০) দ্বিতীয় বলের মাথায় সাব্বিরকে কপি করেন। ওয়াগনারের এই শর্ট বলটি ছিল লেগস্ট্যাম্পের উপর। নুরুল ছেড়ে দিলে বেরিয়ে যায়। সাব্বিরের মতো কী মনে করে ব্যাট দিতে যেয়েও ফিরিয়ে আনেন। বল একটু ছুঁয়ে চলে যায় ওয়াটলিংয়ের আস্তানায়।
নাজমুল হোসেন (১২) শান্ত ৬০টি বল খেলেন। এত সময় ক্রিজে থেকেও বোল্টের দারুণ একটি ডেলিভারিতে মনোযোগ ধরে রাখতে পারেননি। ইয়র্কারে যেভাবে অলস ভঙ্গিতে ব্যাট চালান, তাতে মনোযোগ হারানোর লক্ষণই স্পষ্ট।
অভিষেকের পর থেকে ব্যাট হাতে ধুঁকতে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ (৪) এদিনও যারপরনাই ব্যর্থ। আরো নির্দিষ্ট করে বললে বোল্টের বাউন্সারে পরাস্ত। শর্টলেগে ফিল্ডার রেখেই বোল্ট বাউন্সার মারেন। মিরাজ লাফিয়ে উঠে নিজেকে সামলাতে না পেরে ব্যাট দিতে বাধ্য হন। হাত চারেক পাশে হাঁটুগেড়ে থাকা ল্যাথাম সহজে তা তালুবন্দি করেন।
এমন মরণের দিনে তাসকিন-রাব্বি ব্যাটসম্যানদের লজ্জা দেন। দুই পেসার এই ইনিংসের সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন, ৫১। রীতিমতো ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠা তাসকিন ৩০ বলে ৩৩ রান তুলে ফেলেন। কিন্তু বোল্টের ওই ক্ষিপ্র ইয়র্কারে তাল মেলাতে পারেননি। ব্যাট দিতে একটু দেরি করে ফেলেন। তাতেই ছত্রখান স্ট্যাম্প।
(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এএম)

মন্তব্য করুন