নেট দুনিয়ায় অপু-বুবলীর ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চরমে

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত দুই চিত্রনায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলী ও অপু বিশ্বাসের মধ্যে ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ দীর্ঘ সময়ের। কিছু দিন পর পর নেট দুনিয়ায় কথার যুদ্ধে সরব হন তারা। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পরোক্ষ তীরে বিঁধে ফেলেন একে অপরকে।

আবারও এ দুই চিত্রনায়িকা সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করে ‘স্নায়ুযুদ্ধের’ কামানে বারুদ দিয়েছেন।

সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমে বুবলীকে ইঙ্গিত করে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘উনি যা যা করছেন বা করেন, তা তো আমার সন্তান দেখছেন। আমার সন্তানের তো বোঝার বয়স হয়ে গেছে। এখন জয়ের বয়সীরা অনলাইনে লেখাপড়া করে। আমি নাম বলবো না, একজন তো একটা ভিডিও ছেড়েছেন। জয়ও সেই ভিডিও দেখেছে। সুতরাং এসব ভিডিওতে তার ওপরও তো প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু আমি তো সেই কাজটি করবো না। আমি আমার সন্তানকে সঠিক পথে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমার পারিবারিক শিক্ষা মানুষকে সম্মান দেওয়া, ক্ষতি করা নয় এবং আমি সেটা করার চেষ্টা করি। কে কাকে ছোট করছে, সেই বোধবুদ্ধি আমার আছে। আমি অনেক দিন থেকেই এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়া এড়িয়ে চলতে চেয়েছি। কিন্তু সিনেমার মানুষ হওয়ায় মিডিয়ার সামনে কথা বলতে গিয়ে টুকটাক তা সামনে চলে আসে।’

অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপুর সেই স্বাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে এলে চুপ থাকতে পারেননি বুবলীও। রীতিমতো বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনিও। শুক্রবার সন্ধ্যায় সোশাল হ্যান্ডেলে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ঝাড়েন সমস্ত রাগ। যদিও কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে কারও বিন্দুমাত্র কষ্ট হওয়ার কথা নয়।

শুরুতেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বুবলী। তার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘আমি একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কারও নোংরা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে আমাকে নিয়ে বা আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কেউ কোনও বেফাঁস মন্তব্য করলে বা কোনও ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার চেষ্টা করলে, তার বা তাদের বিরুদ্ধে আমি দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কিছু দিন পর পর যে ব্যক্তি এসব নোংরা খেলা শুরু করেন বা যাদের দিয়ে করান, তাদের সমস্ত কিছু সোশাল মিডিয়া, পত্রিকা এবং ইউটিউবে রয়েছে; যা ডকুমেন্ট হিসেবে যথেষ্ট এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’

পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে অপুর খোঁচার বিপরীতে বুবলীর কড়া জবাব, ‘আমার পারিবারিক শিক্ষা আমাকে কখনোই দুমুখো সাপের আচরণ করতে শেখায়নি, সুবিধাবাদী হতে শেখায়নি, ধর্ম নিয়ে একেকবার একেক মিথ্যা কথা বলে সাধারণ জনগণের আবেগ নিয়ে খেলা করে বোকা বানাতে শেখায়নি, গিরগিটির মতো রঙ বদলাতে শেখায়নি, কাউকে ছুরি মেরে পরক্ষণেই নিজের কোনও সুবিধা হবে ভেবে সেই ছুরি মারা জায়গায় ব্যান্ডেজ করতে শেখায়নি।’

এসব শিখতে না পারার জন্য নিজেকে গর্বিত মনে করেন বুবলী। তার ভাষ্য, ‘আমি এসব না শিখতে পারার জন্য গর্বিত।’

বুবলীর অভিযোগ, তার সন্তান শেহজাদ খান বীরকে নিয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ কটূক্তি করেছেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘কত বাজে, নিচু মানসিকতার হলে সে এক নিষ্পাপ বাচ্চাকেও কটূক্তি করতে ছাড়েনি। কিছু দিন আগে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে আমার সন্তানের গেটআপ নিয়ে ক্যামেরার সামনে বানরের মতো মুখ ভেংচি কেটে বাজে মন্তব্য করতে ছাড়েনি।’

অপুকে উদ্দেশ করে বুবলী আরও বলেন, ‘সারাক্ষণ নানান মিথ্যা, বানোয়াট, উসকানিমূলক ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে; অথচ পরে আবার বলবে, সে ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে না। সারাক্ষণ মানুষকে ছোট করে কথা বলবে, কিন্তু পরে বলবে, সে মানুষকে ছোট করে কথা বলে না! কী অদ্ভুত! একেক সময় একেক রঙ ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার নগ্ন খেলা এসব বহুরূপী নিচু মানসিকতার ব্যক্তিই পারে। লজ্জা!’

এদিকে একই দিন রাতে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অপু বিশ্বাসও। বলেন, জীবন মানে যুদ্ধ। ব্যক্তি জীবনে যখন ১০০ সিনেমা পার করেছি, তারপরও আমাকে যুদ্ধ করতে হয়েছে। যুদ্ধের বিপরীতে কেউ যেতে পারে না। আমাদের বাংলাদেশটা যুদ্ধের মাধ্যমেই পেয়েছি। সুতরাং যাদের জীবনে যতটুকু যুদ্ধ আসবে, তাদের মনে রাখতে হবে আপনি সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন; যার কারণে পেছন থেকে আক্রমণ আসছে। কখনোই বিচলিত হবেন না। সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাবেন আপন গতিতে।’

উল্লেখ্য, অপু বিশ্বাস ও বুবলীর মধ্যকার এই স্নায়ুযুদ্ধের মূল কারণ; তারা দুজনই নায়ক শাকিব খানের ঘর করেছেন। এরমধ্যে অপুর সঙ্গে ২০১৮ সালে শাকিবের বিচ্ছেদ হয়। ওই বছরই বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব, সেখানেও তাদের বিচ্ছেদ হয়। দুই সংসারে শাকিবের দুই পুত্র আছে। অপুর ঘরে আব্রাহাম খান জয়, বুবলীর ঘরে শেহজাদ খান বীর।

(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/এলএম/এসএম)