নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ করেছি: দীপু মনি

তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:০৮
ফাইল ছবি

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সব সময় পূরণ করে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর এবং ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ করেছে সরকার। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ করেছে। আর এসব কারণে জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে।

ঢাকাটাইমসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দীপু মনি কথা বলেছেন নানা বিষয় নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে আগামী জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত তার ভাবনা।

আগামী নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজ কি শুরু হয়েছে?

আমাদের প্রতিটি নির্বাচনী ইশতেহার হলো দেশের পথ চলার পথনির্দেশিকা। কারণ প্রত্যেকবার আমাদের ইশতেহার তৈরিতে আমাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পথচলা এবং মানুষের মত ও আকাঙ্খাকে ধারণ করার চেষ্টা করি। আমরা যখন সরকারে থাকি তখন ইশতেহার ধরে কাজ করি। কারণ দলের ইশতেহার হলো রাজনৈতিক দলের সাথে সাধারণ মানুষের চুক্তি। কারণ আমরা মানুষের সাথে চুক্তি করি যে আমাদের যদি আপনারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি, তাহলে আপনাদের জন্য আমরা এ কাজগুলো করব। আমাদের ইতিহাস ইশতেহার পূরণের। আমরা যখন মন্ত্রী ছিলাম তখন ইশতেহার ধরেই কাজ করছি।

আরও পড়ুন: জিয়ার পাপেই তো রাজনীতির এই অবস্থা

ইশতেহার তৈরির ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় থাকছে?

আমাদের আগামী নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজ আমরা দীর্ঘদিন ধরেই করছি। গত নির্বাচনের বিজয়ের পরে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আমরা আর কী কী করব। গত নির্বাচনে আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তাঁর অগ্রগতি আমরা সময় সময় দেখে পর্যালোচনা করে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ করছি।

গত দুই নির্বাচনের আগে দেয়া ইশতেহার অনুযায়ী কি সরকার কাজ করেছে?

আমাদের কোথাও যদি কোন ধরণের ঘাটতি থাকে তা আমরা জনগণের কাছে স্বীকার করতে কোন দিন দ্বিধা করিনি। কারণ আমরা জানি আমাদের চেষ্টায় কোন ত্রুটি ছিল না। কিন্তু তারপরও বৈশ্বিক ও নানান সময়ে অভ্যন্তরীণ নানান পরিস্থিতি উদ্ভব হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। অনেক সময় আপনি শতভাগ পূরণ করতে পারি না কিন্তু জনগণ বিবেচনায় নেয় আপনার আন্তরিকতা রয়েছে কি না, চেষ্টা করছেন কি না। আবার বহুক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তার চেয়েও আমাদের অর্জন অনেক বেশি। আমরা সবসময় জনগণের কাছে আমাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করি।

২০০৯ সালে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের ইশতেহারের সিংহভাগই পূরণ করেছি। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির বেশি করেছি। এর ভিত্তিতে মানুষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে মানুষ আমাদের আবার দায়িত্ব দিয়েছে।

আগামী নির্বাচনেও বিজয়ী হবেন এমন আত্মবিশ্বাস কেন?

রাজনীতির অর্থ তো মানুষের সেবা করা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত দেশের সেবা করেছি। ওইবারই প্রথম দেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণসহ আরও অনেক অনেক অর্জন করেছি। জনগণের আশা-আকাঙ্খা যেভাবে পূরণ করছি। নির্বাচন একটি প্রতিযোগিতা, এখানে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগী থাকেন। আমি ভালোকাজ করছি তাই আমি ভোট পাব এটাতে আমি বিশ্বাসী। কিন্তু তার সঙ্গে আমাদের প্রতিপক্ষ যদি আমাদের চাইতেও বেশি ভালো কাজ করে, তাহলে তো আমরা পিছিয়ে পরব। কিন্তু আমাদের প্রতিপক্ষ তো ভালো করাতো দূরে থাক, তারা যেন নিজের সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তারা কীভাবে নিজেকে আর কত খারাপ করতে পারেন। তারা এখন নিজেকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। তারা মিথ্যাচার করে, জনগণের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করে, দেশের ইতিহাসের বিরোধী কাজ করেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে চলে। তাই আমরা বিশ্বাস করি জনগণ বিএনপির বদলে আগামীতে আমাদের আবারও আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের কোন্দল নিরসনে কীভাবে কাজ করছেন?

আওয়ামী লীগের দেশের প্রাচীন ও প্রধানতম রাজনৈতিক দল। দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। এর বিশাল বিস্তৃতি ও ব্যাপকতার কারণে আমাদের মতের মধ্যে অনেক রকমের ভিন্নতা থাকে। কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে আমরা এক। তাই আমি এটাকে কোন্দল বলার চাইতে একে ভিন্ন মত বলব। আমাদের তৃণমূলেও ভিন্নমত থাকতেই পারে। আমরা তৃণমূল থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি করে দলকে সুসংগঠিত করছি। আমরা বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে প্রতিনিধি সভা করেছি। সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে, এর মাধ্যমে কর্মীভিত্তি বিস্তৃত করছি। পাশাপাশি সাংগঠনিক যেসব কার্যক্রম রয়েছে, যেমন বিভিন্ন দিবস পালন, প্রচার-প্রচারণা, প্রশিক্ষণের কাজ করছি। আগামী নির্বাচনের জন্য আমরা তৈরি হচ্ছি।

নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের পর মতের ভিন্নতার কেউ বিদ্রোহী হলে?

২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রার্থী বাচাইও আমাদের তৃণমূলের ভোটাভোটির মাধ্যমে হয়েছে। তৃণমূলের সুপারিশ ও আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ের জরিপের ভিত্তিতে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণ করছে। প্রার্থী বাচাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা যেহেতু পুরোপুরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসর করি, তাই আশা করি নির্বাচনে খুব বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী হবে না। যদি হয় সেখানে দল চেষ্টা করবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করা। তারপরও যদি কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনঢ় থাকেন, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আগে মন্ত্রী হিসাবে দেশের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলকে পুরো সময় দিচ্ছেন। ব্যস্ততা কি কমেছে নাকি বেড়েছে?

আমার সাথে যারা আছেন তাঁরা ভাবতেন মন্ত্রী না থাকলে মনে হয় আমার ব্যস্ততা কমবে। কিন্তু এখন এটা মনে হয় সঠিক না। মন্ত্রী থাকাকালীন নির্বাচনী এলাকার লোকজন বলতেন, উনি মন্ত্রী আছেন তাই এলাকায় কম সময় দিচ্ছেন। দেশের কাজই তো করছেন। দলও মনে করতো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছে তাই তাকে দলীয় কাজের বোঝা না দেই। এখন দলের কাজের দায়িত্ব যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তেমনি নির্বাচনি এলাকার জন্য আমার কাজ বৃদ্ধি পেয়েছে।

(চলবে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

‘স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির স্বার্থে সরকারকে ভারসাম্যমূলক নীতি-উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’: ড. আতিউর রহমান

প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল আর্মিরা ধরে নিয়ে যাবে: ফরিদা খানম সাকি

দাম বাড়ালে এতক্ষণে কার্যকর হয়ে যেত: ক্যাব সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন

জন্ম থেকেই নারীদের যুদ্ধ শুরু হয়: নারী উদ্যোক্তা ফরিদা আশা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই

ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম করা উচিত: কাউন্সিলর আবুল বাশার

তদারকি সংস্থা এবং ভবন নির্মাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে: অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

বেইলি রোডের আগুনে রাজউকের ঘাটতি রয়েছে: মো. আশরাফুল ইসলাম

নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ভবন অনুমোদন দিতে হবে: ইকবাল হাবিব

বীমা খাতে আস্থা ফেরাতে কাজ করছি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :