গাজার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি প্রায় অসম্ভব: ডব্লিউএইচও

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলা হাসপাতালেও অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে করে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় গাজার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। এমনকি ভূখণ্ডটির বিপর্যয়কর এই স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি প্রায় অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস জেনেভায় ৩৪ সদস্যের বোর্ডকে বলেছেন, গাজায় চিকিৎসার চাহিদা বেড়েছে এবং একইসঙ্গে রোগের ঝুঁকিও বেড়েছে। আর সংঘাত শুরুর আগের সময়ের তুলনায় গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা এক-তৃতীয়াংশে হ্রাস পেয়েছে। গাজা এবং পশ্চিম তীরে গত ৭ অক্টোবর থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে ৪৪৯ টিরও বেশি হামলা হয়েছে। আর এই কারণে এখন সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করা অসম্ভব।

অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর ডব্লিউএইচও নির্বাহী বোর্ড আয়োজিত একটি বিশেষ অধিবেশনে বক্তৃতার সময় টেড্রোস গাজার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর সংঘাতের বিপর্যয়কর প্রভাবের বিষয়েও জোর দেন। তিনি বলেন, গাজায় ১৭ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছেন বলে জানা গেছে। যার মধ্যে ৭ হাজার শিশু। আমরা জানি না কতজন তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন যা মূলত এই উপত্যকার প্রায় পুরো জনসংখ্যার সমান এবং তারা যেখানে পারছেন সেখানেই আশ্রয় খুঁজছেন। গাজায় কোনও স্থান এবং কেউ-ই নিরাপদ নয়।

এদিকে ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মুস্তাফা বারঘৌতি গাজায় কার্যক্রম পরিচালনা করা ২৫ টি দলের সমন্বয়ে গঠিত ইউনিয়ন অব দ্য প্যালেস্টাইন মেডিকেল রিলিফ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তিনি বলেছেন, গাজার অর্ধেক মানুষ এখন অনাহারে রয়েছেন। অনেকেই পেটের সমস্যায় ভুগছেন কারণ অল্প বিশুদ্ধ পানি এবং তা ফুটানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি না থাকায় আমাশয়, টাইফয়েড এবং কলেরার প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিও রয়েছে।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলায় আহত ৪৬ হাজার লোক রয়েছেন আমাদের কাছে। আহত বিপুল সংখ্যক এসব মানুষের সঠিকভাবে চিকিৎসা করা যাচ্ছে না কারণ গাজা ভূখণ্ডের বেশিরভাগ হাসপাতালই কাজ করছে না। এছাড়া সাড়ে ৩ লাখ লোকের সংক্রমণ রয়েছে যার মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছেন। ভুক্তভোগী এসব মানুষ গরম কাপড়, কম্বল এবং বৃষ্টি থেকে সুরক্ষার অভাবে রয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/এসএম)