ফিরে দেখা শাকিব-বুবলীর পরকীয়া, বিয়ে অতঃপর বিচ্ছেদ

গুঞ্জন বহু আগে থেকেই ছিল। অবশেষে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার কথা স্বীকার করেন চিত্রনায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলী। জানা যায়, ২০১৬ সালে সাবেক সংবাদপাঠিকা বুবলীর অভিষেক সিনেমা ‘বসগিরি’র সেট থেকেই শাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরু।

যেহেতু ওই সময় শাকিব খান বিবাহিত ছিলেন এবং তার প্রথম স্ত্রী আরেক চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস বর্তমান ছিলেন, তাই বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় বুবলীর সঙ্গে তার সম্পর্কটার নাম ছিল ‘পরকীয়া’। প্রায় তিন বছর এই সম্পর্কে থাকার পর ২০১৮ সালের ২০ জুলাই শাকিব খানকে বিয়ে করেন বুবলী।

শুধু তাই নয়, পুত্রসন্তানের অভিভাবকও হয়েছেন আলোচিত এই জুটি। ২০২০ সালের ২১ মার্চ সুদূর আমেরিকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্র শেহজাদ খান বীরের জন্ম দেন বুবলী। সব খবরই গত বছর পর্যন্ত ছিল গোপন। তবে জোর আলোচনা চলছিল ঢালিউডপাড়ায়। পরে বুবলীই সেসব গুঞ্জনে সিলমোহর দেন।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ‘বসগিরি’র এই নায়িকা তার ফেসবুক পেজে সন্তান বীরের সঙ্গে নিজের এবং শাকিব খানের তোলা একাধিক ছবি পোস্ট করেন। জানান, এই সন্তানের বাবা শাকিব খান। এও জানান, তাদের মধ্যে সবকিছু ইসলামি শরিয়ত মতোই হয়েছে। পরে শাকিবও বুবলীর দাবিকে মান্যতা দেন।

কিন্তু এর কয়েক দিন পরেই বোমা ফাটান ঢালিউড কিং। জানান, বুবলী তার জীবনে অতীত। তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই। একাধিক সাক্ষাৎকারে শাকিব খান স্পষ্ট করেই জানান, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। যদিও বুবলী বরাবরই দাবি করে আসছেন, তাদের বিচ্ছেদ হয়নি, আলাদা থাকছেন মাত্র।

কিন্তু স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও কেন শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বুবলী? এমন প্রশ্ন বহুবার উঠেছে। প্রতিবারই বুবলীর দাবি ছিল, শাকিব খানের প্রথম বিয়ে এবং সন্তান থাকার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। যদিও একটা সময় ফেসবুকে নিয়মিতই চলতো অপু বিশ্বাসের সঙ্গে তার ঠান্ডা লড়াই।

বলা বাহুল্য, এর আগে ২০০৮ সালে অপু বিশ্বাসকেও গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ছেলে আব্রাম খান জয়ের জন্মও দেন গোপনে। পরের বছর একটি টিভি চ্যানেলে গিয়ে অপু প্রকাশ করেন শাকিব খানের সঙ্গে তার বিয়ে ও সন্তান জন্মদানের কথা।

এ ঘটনার ৬ মাস পরই নানা অভিযোগ তুলে অপুকে তালাকের নোটিস পাঠান শাকিব খান। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দুই তারকার মধ্যে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শাকিব-অপুর তালাক আইনগত ভাবে কার্যকর হয়ে যায়। এর ৫ মাসের মাথায় বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান।

তবে বর্তমানে কোনো স্ত্রীর সঙ্গেই থাকছেন না ঢালিউড সুপারস্টার। দুজনই নাকি তার জীবনে অতীত। যদিও গত কোরবানির ঈদের আগে গুঞ্জন ওঠে, ফের জোড়া লাগতে চলেছে শাকিব-অপুর ভাঙা সংসার। সে সময় মুক্তি পায় শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ এবং অপুর ‘লাল শাড়ি’। দুজনেই একে অপরের সিনেমার পোস্টার শেয়ার করে শুভকামনা জানান এবং হলে গিয়ে দর্শকদের সিনেমা দেখার আহ্বানও জানান।

এরপর প্রথম স্ত্রী এবং সন্তান জয়কে নিয়ে আমেরিকায় ঘুরেও বেড়ান শাকিব খান। একসঙ্গে পারিবারিক অনুষ্ঠানেও হাজির হন। তাতে গুঞ্জন আরও জোরালো হয় যে, ফের শাকিবের সংসারে এন্ট্রি নিতে চলেছেন অপু। যদিও শাকিব পরে জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ওই ঘোরাঘুরি ছিল তার পক্ষ থেকে ছেলে জয়ের জন্য গিফট। ভবিষ্যতে ছোট ছেলে বীরকেও যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি।

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ছোট ছেলেকে রাজধানীর বসুন্ধরায় নামদামি এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন শাকিব খান। স্কুলের প্রথম দিন ছেলের সঙ্গে সেখানে যানও। এ সময় দ্বিতীয় স্ত্রী বুবলীও ছিলেন সঙ্গে। একই স্কুলে পড়ে কিং খানের বড় ছেলে জয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বড় ভাই জয়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানায় ছোট ভাই বীর।

ওই দৃশ্য চিত্রনায়িকা বুবলী তার ফেসবুকে পোস্ট করেন। নেটবাসীর প্রশংসা কুড়ায় ওই ভিডিও। পাশাপাশি অনেকে মনে করছেন, অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আর কোনো প্রকার ঠান্ডা লড়াই যেতে চান না বুবলী। বরং দুজনে মিলেমিশেই শাকিব খানের প্রাক্তন হয়ে থাকতে চান। তবে ভবিষ্যতে কী হবে, তা তো সময়ই বলে দেবে।

(ঢাকা টাইমস/১৬অক্টোবর/এজে)