নুহাশ পল্লীতে কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমদের জন্মদিন উদযাপিত

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:০২

বরেণ্য কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমদের ৬৮তম জন্মদিন উদযাপিত হলো নুহাশ পল্লীতে। লেখকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও ভক্ত শোভার্থীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্যদিয়ে লেখকের জন্মদিন উদযাপন করা হয়।

জন্মদিন উপলক্ষে সকালে নুহাশ পল্লীর লিচু তলায় তার কবরে জবা আর গাঁদা ফুল দেন স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এসময় দুই পুত্র নিষাদ ও নিনিত নুহাশ পল্লীর কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কবর জিয়ারতে অংশ নেন হুমায়ুন আহমেদর ভাই ড. অধ্যাপক মো. জাফর ইকবাল, ছোটভাই কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব এবং তিন বোন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহীদ, রোকসানা আহমেদসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা।

মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের জানান, হুমায়ূন জীবিত থাকাকালে যেভাবে বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের নিয়ে কেক কাটতেন ১৩ নভেম্বর প্রথম প্রহরে ঠিক তেমনভাবে কেক কাটা হয়েছে।

তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের কাজগুলো নিয়ে আমাদের মনে হয় না তেমন কিছু করতে হবে। তার লেখনির মাধ্যমেই তিনি পাঠকের কাছে বেঁচে থাকবেন। সুতরাং আমার মনে হয় না হুমায়ূনকে মনে রাখতে তেমন কোন দায়িত্ব নিতে হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে শাওন বলেন, ক্যান্সার হাসপাতালকে ঘিরে হুমায়ূনের যে স্বপ্ন ছিল, তা হুমায়ুনের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল। এটি একা শাওনের পক্ষে সম্ভব নয়।

কবর জিয়ারত শেষে হুমায়ূনের ছোট ভাই ড. জাফর ইকবাল বলেন, মৃত্যুর আগে হুমায়ূনের সাথে তার ব্যক্তিগত কারণে আমাদের সম্পর্কে একটি দূরত্ব তৈরি হয়, যার জন্য এখন আমি অনুতাপে ভুগি- আমার কষ্ট হয়। আমি যদি জানতাম তিনি মারা যাবেন, তবে আগেই দূরত্ব ঘুচানোর চেষ্টা করতাম। তার শূন্যতা আমরা সবাই অনুভব করি।

নুহাশপল্লীর ভাস্কর আছাদুজ্জামান আসাদ জানান, স্যার জীবিত থাকতে যেভাবে তার জন্মদিন উদযাপন করতেন, আমরাও চেষ্টা করছি- সেভাবে তার জন্মদিন উদযাপন করতে। সকালে তার দুই শিশুপুত্র এবং শাওন আপাসহ পরিবারের লোকজন জন্মদিনের কেক কাটেন। এছাড়া এ উপলক্ষে কাঠের শিল্প কর্ম নিয়ে আমার প্রথম একক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। জন্মদিন উপলক্ষে নুহাশপল্লী সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

এদিকে, সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লেখকের ভক্ত-অনুরাগীরা নুহাশ পল্লীতে ভিড় জমান। এসময় তারা লেখকের সমাধিতে নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে শ্রদ্ধা জানান। সমাধি প্রান্তে হুমায়ূন আহমদের সঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে লেখককে স্মরণ করেন অনেকেই। হুমায়ূন আহমদ তার অমর কথা শিল্পের মাধ্যমে যুগ যুগ ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে বেঁচে থাকবেন বলেন জানান ভক্ত-অনুরাগীরা।

এইসব দিন রাত্রি, বহুব্রীহি, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবার -এর মতো জনপ্রিয় সব নাটকের অমর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের জন্ম নেত্রকোনায় ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর। তার পরিচালিত সিনেমা আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলাসহ বেশ কয়েকটি সিনেমা বাংলা চলচ্চিত্রে দারুণ সাড়া ফেলে।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৬৪ বছর বয়সে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশ-বিভুঁয়ে মারা যান সবার প্রিয় এ কথা সাহিত্যিক। তবে হুমায়ূন আহমদের নিজ হাতেগড়া নন্দন কানন নুহাশপল্লী আর তার লেখনির মাধ্যমে মানুষের মনের মধ্যে চিরদিন দিন বেঁচে থাকবেন এমনটাই মনে করছেন তার ভক্ত অনুরাগী ও নুহাশপল্লীর লোকজন।

(ঢাকাটাইমস/১৩ নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :