রাজধানীর ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:৪৪

রাজধানীর সৌন্দর্য বাড়াতে বিলবোর্ড-ব্যানার-পোস্টার সরানো ও ফ্লাইওভারের নিচের পিলারে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

এরই অংশ হিসেবে সোমবার মগবাজার চৌরাস্তায় অবস্থিত ফ্লাইওভারের পিলারে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর মগবাজার থেকে সাতরাস্তামুখী ফ্লাইওভারের নিচের পিলারগুলোতে ব্যানার-পোস্টার তুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাদা রঙ করা হয়েছে। ধবধবে সাদা রঙের ক্যানভাসে ফুটে উঠছে দৃষ্টি নন্দন গ্রাফিতি। তাতে শোভা পাচ্ছে দেশীয় সংষ্কৃতি এবং শিক্ষণীয় বিষয়।

চারটি পিলারের একটিতে পরিবেশ সংরক্ষণের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পিলারের একপাশে এক কিশোর চারা গাছ লাগাচ্ছে, আরেক কিশোর বই নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। একটিতে লেখা রয়েছে ‘হর্ন বাজাবেন না’, ‘পোস্টার না লাগাই’। আর দুটি পিলারের একটিতে ফুল, পাখি, সূর্য এবং আরেকটিতে ফুলের নকশার সঙ্গে নৌকা দিয়ে অবহমান বাংলার সংষ্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

মাত্র কাজ শুরু হলেও পিলারগুলো সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। পথচারীদের অনেকেই মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছেন সেই দৃশ্য।

মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এই দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে বলেন, এই দেশটা আমাদের, এই শহরটা আমাদের। এই দেশ, এই শহর বাহিরের কারো নয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি। অথচ যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে আমরা নিজেরাই এই শহরে দৃশ্যদূষণ করছি। আমরাই শব্দদূষণ করছি, বায়ুদূষণ করছি। শহরের দূষণবন্ধে আমাদের নিজেদের ঠিক হতে হবে, সচেতন হতে হবে। শুধু সরকার, সিটি করপোরেশন দায়িত্ব নিলে হবে না। সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।'

মেয়র বলেন, আমরা যে পোস্টার লাগাচ্ছি, আমরা যে শহটাকে নিজেরাই দৃশ্যদূষণ করে ফেলছি। এই শহরের মধ্যে আমরা ঘুরে ঘুরে দেখি কী ছিল এই পিলারগুলোতে। আমরা নিজেরাই দৃশ্যদূষণ করে ফেলতেছি, আমরা বায়ুদূষণ করছি। আমাদের নিজেদেরকে ঠিক হতে হবে। এটা সরকার করে দেবে না, সিটি করপোরেশন করে দেবে না। আমরা প্রত্যেকে যদি সচেতন হই তাহলে আমরা পারব।

গ্রাফিতি আর্ট পিলার দেখিয়ে মেয়র বলেন, এই যে পিলারগুলো কী অবস্থায় ছিল? মগবাজারে ঢোকার সময় এই পিলারগুলো দেখে মনে হতো এখানে কোনো মানুষ বাস করে না। আমরা সবাই অমানুষ হয়ে গেছি। আমরা নিজেদেরকে খেয়াল করি না। আমরা খেয়াল করি না যে এই শহরে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা থাকবে। তাদেরকে কী মেসেজ দেব আমরা? আমরা যত্র তত্র পোস্টার লাগাচ্ছি। আমরা নেতাদের যত ধরনের তেল মারা, যত ধরনের ফোলানো, যত ধরনের পামপট্টি মারা, অমুক ভাই এগিয়ে চলুন- অমুক ভায়ের পেছনে আছি— আর লিখে দেয় সৌজন্যে অমুক ভাই। আগে হলো ভায়ের পোস্টার বিরাট বড় তারপর নিচে সৌজন্যে। এই সৌজন্যে যারা লিখবেন তাদের জন্য মেস্যেজ একটায় তাদের জরিমানা হবে কোর্টে তাদের জেল হবে। আমরা এত টাকা খরচ করে এতো সুন্দর করে পিলারগুলোকে সাজিয়ে দিচ্ছি তার পরে আমি বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করবো আমরা যেনো কোন ধরনের পোস্টার, লিখনি, অ্যাড, ফেস্টুন যেনো না লাগায়। আমরা মানুষ হই। এই শহরটাকে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর শহর করতে চাই।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে আমাকে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন রিকশা পেইন্টারদেরকে দিয়ে এগুলো পেইন্ট করাও। আমাদের বাংলাদেশের যে সবচেয়ে নামকরা যে রিকশা পেইন্টার সেও কিন্তু এই পেইন্টের কাজে এসেছে। আমরা কিছু শিক্ষণীয় মেসেজ দিতে চাই। হর্ন বাজানো নিষেধ, এই শহরটাকে ভালোবাসি, দেশটাকে ভালোবাসি, তিনদিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন, গাছ লাগায় পরিবেশ বাচায় এই ধরনের মেসেজগুলো আমরা বিভিন্ন পিলারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ দিতে চাই।

মেয়র আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রিকশায় যারা পেইন্টিং কাজ করতেন তাদের যেন সম্পৃক্ত করি৷ তাই রিকশা পেইন্টিং এর সাথে সম্পৃক্ত বিখ্যাত চিত্র শিল্পীদেরএই গ্রাফিতি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মগবাজার ফ্লাইওভারে শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে বাকি ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেলের পিলারেও গ্রাফিতি করা হবে।'

জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, 'আমি এলাকাবাসীদের, কাউন্সিলরদের, মুরুব্বিদের, শিক্ষকদের, মসজিদের ইমামদের এবং সব জনগণকে অনুরোধ করছি আপনারা এগিয়ে আসুন। সুন্দর পিলারগুলোতে পোস্টার লাগাবেন না। শহরকে রক্ষায় আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের গ্রাফিতি কার্যক্রম রয়েছে। আমরাও কিন্তু চাইলেই পারি। সবাই সচেতন হলে আমরা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পারব।'

এসময় ফ্লাইওভারের পিলারের সৌন্দর্য রক্ষায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর ঘোষণাও দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকতা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আ, ন, ম তরিকুল ইসলাম, ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তার সরদার, ৮নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মিতু আক্তার, ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর নাজমুন নাহার হেলেন ও ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/কেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

মোহাম্মদপুরে ড্রেনে মিলল গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করল বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট

ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের পানি-ক্যাপ-ছাতা বিতরণ

মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে ডিবির অভিযান

কথিত মানবসেবার আড়ালে অপকর্ম: বাবাকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়েন মিল্টন, ওষুধ বিক্রির টাকা চুরি করে চাকরিচ্যুত

শ্রমিকদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবি জাগ্রত শ্রমিক বাংলাদেশের

গরমে ঢামেক কর্মচারীর মৃত্যু

মিরপুরে বাসচাপায় ফুফু-ভাতিজা নিহত

নিকুঞ্জে আবাসিক ভবনে বিস্ফোরণ, দেয়ালে ফাটল

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মুগদায় সড়কে উচ্ছেদ অভিযানের অভিযোগ

ছিনতাই: ধরা পড়লেই ব্লেড দিয়ে নিজের বুক-পেট কাটতেন হৃদয়

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :