গাজায় গণহত্যার চিহ্ন পাওয়া যায়নি, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩০ | প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৭

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের দাবি, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে- এমন কোনো প্রমাণ পায়নি ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে আন্তজাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরদ্ধে গাজায় গণহত্যা মামলা দায়েরের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সমালোচনা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর আরটি’র।

গত ৩০ ডিসেম্বর বাদি হয়ে আইসিজেতে মামলাটি দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়া এ বিষয়ে দক্ষিণ আফিকাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয় তুরস্ক।

মামলার আবেদনপত্রের সঙ্গে ৮৪ পৃষ্ঠার একটি নথিতে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে আইসিজেকে দ্রুত এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই ১১ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করেছে আইসিজে। পাশাপাশি শুনানিতে উপস্থিত থাকতে ইসরায়েলকে প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য সমনও পাঠিয়েছে জাতিসংঘের আদালত।

আইসিজের এই আদেশের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘গণহত্যা খুবই ঘৃণ্য ধরনের নৃশংসতা। বিশ্বে যতরকম নৃশংসতা-নিষ্ঠুরতা দেখা যায়, সেসবের মধ্যে গণহত্যা সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক অপরাধগুলোর একটি।’

‘তাই এই ব্যাপারটিকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। তবে যদি এ ব্যপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়, তাহলে আমরা বলব, গণহত্যার স্বীকৃত সংজ্ঞায় যা উল্লেখ করেছে— গাজায় তা ঘটেনি এবং যারা মামলা দায়ের করেছে, তারা কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নেয়নি।’

পৃথক এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ ভিত্তিহীন। দক্ষিণ আফ্রিকা যে মামলা দায়ের করেছে, তা থেকে কোনো ফলাফল আসবে না।’

এদিকে আইসিজের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশন জানিয়েছে, এই মামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে ইসরায়েলের মানহানি করার চেষ্টা করা করা হয়েছে এবং এর জবাব দিতে শুননির দিন আদালতে উপস্থিত থাকবে ইসরায়েল।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচারে হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে আনা হয়েছে এমন নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ২২ হাজার ছড়িয়ে গেছে। এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৩২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি।

এছাড়া প্রায় তিন মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ৮৪ ইসরায়েলি এবং ২৪ বিদেশিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯টি শিশু রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এর মধ্যে বন্দিবিনিময়ে ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের কাছে এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/০৪জানুয়ারি/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :