টেকনাফে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে অপহৃত ৫ রোহিঙ্গা কিশোর

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:২১

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া ন্যাচারপার্কে ঘুরতে যাওয়া পাঁচ রোহিঙ্গা কিশোর অবশেষে সন্ত্রাসীদের পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ ‍দিয়ে ফিরে এসেছেন বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী পরিবারগুলো।

ফেরত আসা কিশোরেরা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা।

তারা হলেন-সি ব্লকের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বেলাল (১৩), মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে নূর কামাল (১২), মো. উবায়দুল্লাহর ছেলে নূর আরাফাত (১২), বি ব্লকের মো. রফিকের ছেলে ওসমান (১৪) এবং ডি ব্লকের মাহাত আমিনের ছেলে নুর কামাল (১৫)।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণে সন্ত্রাসীরা তাদের ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন, রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (১৬ এপিবিএন) পুলিশ সুপার মো.জামাল পাশা।

জানা গেছে,গত ২৪এপ্রিল সোমবার দুপুরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরার ন্যাচারপার্ক এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে তাঁদের ধরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

ভুক্তভোগী কিশোরদের স্বজনদের দাবি,ইদ উপলক্ষে ওই কিশোররা আশ্রয়শিবির থেকে ঘুরতে বেরিয়েছিল।রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাদের অপহরণের পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ হিসেবে ২০লাখ টাকা দাবি করেন। গত চারদিন তাঁদের সঙ্গে দর কষাকষি করার পর জনপ্রতি একলাখ করে তাদের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে রেখে আসলে পরে অপহৃত কিশোরদের রাতে আধাঁরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার মো.জামাল পাশা বলেন,গত সোমবার দুপুরে দমদমিয়া ন্যাচারপার্ক থেকে মুখোশধারী সাত থেকে আটজন সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ওই কিশোরদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়। ওই কিশোরেরা ইদ উপলক্ষে আশ্রয়শিবির থেকে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে গিয়েছিল। দমদমিয়া ন্যাচার পার্ক এলাকা থেকে তারা অপহরণের শিকার হয়। তবে মুক্তিপণ দাবির বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তাঁদের কিছুই জানায়নি। এরমধ্যে তাদের উদ্ধারের জন্য পুলিশ ও এপিবিএন পুলিশ দিন-রাত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। হইতো অভিযানের কারণে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

ওই আশ্রয়শিবিরের দায়িত্বশীল ও ব্যবস্থাপনার কমিটির নেতা বলেন,রোহিঙ্গা শিবিরে আশেপাশের পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানা রয়েছে।আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার।সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগী পরিবারে ফোন দিয়ে জনপ্রতি চার লাখ করে মুক্তিপণ দাবি করলেও অবশেষ জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে আদায় করেছে। তাদের দাবি করা মুক্তিপণের টাকা না পেলে অপহৃত কিশোরদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।সন্তানদের জীবন রক্ষার্থে প্রশাসনের অগোচরে মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আনা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, অপহরণের ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী কিশোরদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনোধরনের অভিযোগ দেওয়া হয়নি।এরপরও পুলিশ ওই কিশোরদের উদ্ধারের জন্য দিন-রাত অভিযান চালানো হয়েছে।

নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন,ওই কিশোরদের অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগী পরিবারে ফোন করে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। টাকা আদায়ের জন্য অপহৃতদের মারধর ও নির্যাতন করা হয়।বর্তমানে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অপহরণ আতঙ্কে জীবন-যাপন করছেন রোহিঙ্গারা। এ কারণে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন মুখ খুলতে চাচ্ছে না।

(ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :