৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি

বেনাপোল বন্দরে কমেছে আমদানি বাণিজ্য

অনলাইন ডেস্ক
| আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:২৪ | প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:২১

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি বাণিজ্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়েও ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, বেনাপোল কাস্টম হাউসে ব্যাপক কড়াকড়ির কারণে আমদানিকারকরা এই বন্দর দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমদানি কমে গেছে উচ্চ শুল্ককরের পণ্য সমূহে।

সূত্র মতে, আমদানিকারকরা মোটরপার্টস, ফেব্রিকস, আয়রন, স্টিল, আপেল ও মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশ বেনাপোল দিয়ে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে এসব পণ্য থেকে প্রায় ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে।

চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। গত ৪ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র এক হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২৪০ কোটি টাকার রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, মূল কারণ হচ্ছে ব্যাংক থেকে এলসি ওপেন করতে না পারা। ডলার সঙ্কটের কারণেই আমদানি বাণিজ্যে এ ধরণের ধ্বস নমেছে বলে জানান তিনি।

আমদানিকারক আমিনুল ইসলাম আনু বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য ১১০ দশমিক ৪২ টাকা। এলসির সমুদয় টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করলেও ব্যাংক এলসি দিচ্ছে না। এলসি করতে গেলে পিআই অনুমোদনের জন্য ব্যাংকের উচ্চমহলে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে এলসি করতে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ছিল ১১২ টাকা। চলতি সপ্তাহে তা বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে। বাণিজ্যিক পণ্যের এলসি না হওয়ায় আমদানি বাণিজ্য কম গেছে। ফলে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

তার মতে ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আবারও বাণিজ্যে গতি ফিরবে ।

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জুয়েল রানা জানান, ভারতের নাসিক থেকে আসা আপেলসহ অন্যান্য উচ্চ পচনশীল পণ্যের চালান আসতে প্রায় তিনদিন সময় লাগে। ফলে পচে যায় অধিকাংশ কার্টনের ফল। পচা মালের রাজস্ব আদায় করায় অধিকাংশ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ডলার সঙ্কট চলছে। ডলার সঙ্কট দেখিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এলসি দিতে চাচ্ছে না। আর এলসি দিলেও ডলারের রেট অনেক বেশি। ডলার বাইরে থেকে কেনার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে তারা। এলসি না হওয়ার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি অনেক কমে গেছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস নামার কারণ আমদানি বাণিজ্য কমে যাওয়া। এলসি করতে ব্যাংক ম্যানেজার ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কারণে এলসি কমে গেছে বলেও জানান তিনি।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘জেনেছি ডলার সঙ্কটে এলসি না হওয়ায় আমদানি কম হচ্ছে। মোটরগাড়ি ও মোটরপার্টস থেকে ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি আছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :