বর্ণাঢ্য আয়োজনে ১১তম জন্মদিন পালন করল শব্দঘর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৪ | প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩৭

সাহিত্য সংস্কৃতির মাসিক পত্রিকা শব্দঘর ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি ‘শুদ্ধ শব্দের নান্দনিক গৃহ’ প্রতিপাদ্যে প্রথম প্রকাশিত হয়। পথচলার শুরু থেকেই নবীন-প্রবীণ লেখকের সম্মিলনে পত্রিকাটি নজর কেড়েছে সাহিত্যপ্রেমীদের। এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে ভারতের কলকাতাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের পাঠকের পড়ার টেবিলে। সময়ের পরিক্রমায় দশ বছর পেরিয়ে লেখক ও মনোচিকিৎসক মোহিত কামাল সম্পাদিত এবং মাহফুজা আখতার প্রকাশিত পত্রিকাটি পদার্পণ করল এগারো বছরে।

২৩ জানুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ১১তম জন্মদিন পালন করেছে শব্দঘর। এই সঙ্গে প্রদান করা হয়েছে গুণিলেখক সম্মাননা ও পুরস্কার। সম্মাননা দেওয়া হয়েছে দুজন বরেণ্য লেখককে। প্রাবন্ধিক মফিদুল হক এবং কথাসাহিত্যিক মঞ্জু সরকারকে প্রোর্ট্রেট তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশের খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, শব্দঘর-এর সম্পাদক মোহিত কামাল এবং শব্দঘর-এর প্রকাশক মাহফুজা আখতার।

এছাড়া ২০২৩ সালে শব্দঘর নির্বাচিত সেরা বই পুরস্কারে বিজয়ী হয়েছেন চার জন লেখক। তারা হলেন শাহনাজ মুন্নী (গল্পগ্রন্থ, নির্বাচিত গল্প), মিনার মনসুর (কাব্যগ্রন্থ, ব্রাসেলসের সন্ধ্যাটি ছিল মনোরম), মাহবুবুল হক (প্রবন্ধগ্রন্থ, লোকসংস্কৃতি চর্চা) এবং এমদাদ রহমান (অনূদিত গ্রন্থ, নৈঃশব্দ্যের সংলাপ)।

বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া, কথাসাহিত্যিক কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, প্রবন্ধকার মোহীত উল আলম, প্রবন্ধকার বিশ্বজিৎ ঘোষ, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, শব্দঘর-এর প্রকাশক মাহফুজা আখতার এবং শব্দঘর-এর সম্পাদক মোহিত কামাল প্রমুখ উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন শংসাপত্র, সম্মাননাপত্র এবং নির্দিষ্ট অর্থমূল্যের চেক।

এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য বহু লেখক, প্রকাশক, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীগণ। মূল্যবান বক্তব্য এবং কেক কাটার মাধ্যমে বাংলা ভাষার শীর্ষস্থানীয় লেখকগণের আশীর্বাদপুষ্ট হয় শব্দঘর।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গান গেয়ে সংগীত পরিবেশন করেন প্রমিলা রায়। নজরুল সংগীত শিল্পী ফাতেমা-তুজ-জোহরা সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার লেখালেখির আত্মপ্রকাশ ঘটে শব্দঘর পত্রিকার মাধ্যমে।

গানের পর স্বাগত বক্তব্য দেন শব্দঘর–এর সম্পাদক কথাশিল্পী মোহিত কামাল। তিনি উপদেষ্টা পর্ষদসহ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সবার পরিচিতি তুলে ধরেন। এই দীর্ঘ সময় একটি সাহিত্য-সংস্কৃতির পত্রিকা টিকিয়ে রাখতে যাঁরা লেখা দিয়ে ও অন্যান্যভাবে সহায়তা করেছেন, তাঁদেরসহ পাঠকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

মফিদুল হক বলেন, আমাদের দেশে ভালো মানের একটি সাহিত্য-সংস্কৃতির পত্রিকা প্রকাশ করতে যে নিষ্ঠা, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়, আর তা থেকে যে প্রাপ্তি আসে তাতে কোনো মিল থাকে না। তা সত্ত্বেও মোহিত কামাল বহু বছর ধরে এ পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছেন। অন্যদিকে শব্দঘর দেশের বাইরে বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বহির্বিশ্বের বাংলাভাষীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

মঞ্জু সরকার বলেন, সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি শব্দঘর তাঁদের দুজনকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এমন প্রকাশনা যেকোনো সাহিত্যিকের জন্যই খুব আনন্দের।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কবি ও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, অধ্যাপক মোহিতুল আলম, কবি নাসির আহমেদ ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।

অনুষ্ঠানের সভাপতি চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী বলেন―শিল্পসাহিত্যের নানাজনের সঙ্গে আমাদের সঙ্গে সুযোগ ছিল এখন সেটা নাই। তিনি শিল্প-সাহিত্যিকদের শব্দঘর পত্রিকায় একসঙ্গে কাজ করে দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। এছাড়া তরুণ লেখকদের শব্দঘর পত্রিকার মাধ্যমে সুযোগ তৈরি করা। শব্দঘর কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী সবাইকে নিয়েই এগিয়ে চলেছে। এখন একটা বিচ্ছিন্নতার যুগ চলছে। সেখান থেকে সরে এসে সৃজন-মননের ক্ষেত্রে সবার মধ্যে একটি মেলবন্ধন সৃষ্টিতে শব্দঘরের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।

শব্দঘর-এর সম্পাদক মোহিত কামাল বলেন―‘শব্দঘর-এর প্রকাশনা শুরু করেন ধূমকেতু লেখায় উৎসাহিত হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বিশ্বকবি রবীবন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাধ্যমে। শব্দঘর পত্রিকায় গানের শিল্পীদের লেখালেখির মাধ্যমে প্রথম উৎসাহিত করেন।’

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান তরুণ কথাসাহিত্যিক মাহবুব ময়ূখ। সঞ্চালনা করেন কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শেষে বক্তারা বলেন শব্দঘর পত্রিকা বাংলা ইংরেজি দুই ভাষায় প্রকাশিত হয়। সকল কবি- লেখক-সাহিত্যিকদের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৪ জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :