বর্ষাকালে যা খেলে ভালো থাকবে শরীর

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ জুন ২০২৩, ১১:৩৪ | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০২৩, ১০:১৩

প্রচণ্ড গরম, বর্ষা ও পাহাড়ী ঢলের কারণে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু, জ্বর, সর্দি, কাশি, পেটখারাপের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব। বর্ষাকালে আবহাওয়ার তারতম্য বেশি হওয়ার কারণে চিকিৎসকেরা এই সময়টাতে খাবারের ব্যাপারে বেশি সতর্ক হতে বলছেন। বিশেষ করে এই সময়ই সব চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে জীবাণুরা। এই সময় ফুড পয়জেনিং, ডায়েরিয়া ও ফ্লু সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময় খাওয়া-দাওয়ার ওপর বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নেওয়া যাক বর্ষাকালে কোন কোন খাবার খেতে হবে।

বর্ষার মৌসুমে শরীর সুস্থ রাখতে মৌসুমী সবজি ও ফল প্রচুর পরিমাণে খাওয়া জরুরি। আপেল, জাম, লিচু, ন্যাশপাতি এই সব মরসুমি ফল খান। এ ছাড়া অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রাখুন ওল, মিষ্টি আলু, গাঁঠি কচু, করলা ইত্যাদি সব্জি। শরীরকে সুস্থ রাখতে ও শরীর আর্দ্র রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি খান।

ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী। শ্বাসকষ্ট দূর করতে মধু দারুণ কাজ করে। আধা গ্রাম গুঁড়া করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু ও আদা মিশিয়ে দিনে তিনবার খেলে হাঁপানি রোগে উপকার পাওয়া যায়।

ডাবের পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। কারণ ডাবের পানিতে রিবোফ্লোবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন ও পিরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর। ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা আক্রমণ করতে পারে না।

বর্ষায় নিয়মিত লেবু খেতে পারেন। কারণ লেবুতে ‘রুটিন’ নামের বিশেষ ফ্লাভোনয়েড পাওয়া যায়, যা শিরা ও রক্ত জালিকার প্রাচীর শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া লেবুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি ও বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, যা সর্দিকাশির সমস্যা দূরসহ বিভিন্ন ক্যানসার নিরাময়ে সহায়তা করে। স্নায়ু ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, ফুসফুস পরিষ্কার রাখে এবং হাঁপানির সমস্যা দূর করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বর্ষায় খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে। খালি পেটে অথবা নাশতার পর ১ কোয়া রসুন খাতে পারেন। সামান্য তেলে অর্ধেক কোয়া রসুন ভেজে তা এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেলে বুকে জমে থাকা কফ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শরীর থেকে জ্বর ও ঠান্ডা দূর করতে প্রতিদিন ২-৩ কোয়া রসুন কাঁচা খেতে হবে।

ডিটক্স ওয়াটার হিসেবে গ্রিন টি- ও যথেষ্ট উপকারী। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা দূর করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিফ্লেমেটরি উপদান সমৃদ্ধ এই পানীয়।

তুলসী পাতা মেশানো চা যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ অর্থাৎ ইনফেকশন থেকে আপনাকে দূরে রাখে। সেই সঙ্গে সুস্থ রাখে আপনার ত্বককেও।

হলুদ মেশানো দুধ স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভাল। শরীরের নানা রকমের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি আপনার ত্বকের ইনফেকশন দূর করতেও সাহায্য করে এই হলুদ।

বর্ষার মরশুমে আপনার ডায়েটে থাকুক রকমারি ফল। বিভিন্ন ধরনের ফল খেলে পেটও ভরবে। শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকবে।

ভাজাভুজি এবং স্ট্রিট ফুড ও তেলমশলা যুক্ত খাবার বর্ষাকালে এড়িয়ে চলাই ভাল। কারণ এর প্রভাবে স্বাস্থ্যের অবনতির সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ক্ষয়ক্ষতিও হতে পারে।

ত্বক আর্দ্র রাখতে এবং সর্বোপরি সুস্থ থাকলে পরিমিত পানি পান করুন। শরীরে পানির ঘাটতি হওয়া কখনই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়।

বর্ষাকালে পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। তাই বাইরের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা যায়, ততটাই ভালো। এবার থেকে ঘন ঘন রেস্তোরাঁ থেকে খাবার আনার সময় এই বিষয়টা খেয়াল রাখবেন। মাছ-মাংস না খেলে মন ভালো থাকে না? কিছু পুষ্টিবিদের মতে কিন্তু বর্ষাকালে মাছ, মাংস ও ডিম যতটা সম্ভব কম পরিমাণে খাওয়া যায়, ততই ভাল। বিশেষ করে মাছ, কারণ এটি মাছেদের প্রজননের সময়। সামুদ্রিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে বর্ষাকালে সেটিও এড়িয়ে চলুন। রান্না করার সময় খাবারে রসুন ও পেঁয়াজের পরিমাণ কমান।

বর্ষাকালে কোনো সময়ই কেটে রাখা ফল খাওয়া উচিত না। এই সময় তো নয়ই। বাতাসের সংস্পর্শে তার ওপর নোংরা ব্যাকটেরিয়া জন্মায়।

যে কোনো খাবার ভালো করে রান্না করে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। কাঁচা খাবার বর্ষায় না খাওয়াই ভালো। বর্ষায় এ ধরনের খাবারে জন্ডিস, টাইফয়েডের আশঙ্কা অনেক বাড়িয়ে দেয়।

(ঢাকাটাইমস/২২ জুন /আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :